শুভ দত্ত, বানারহাট: গরম এখনও সেভাবে পড়েনি, তাতেই বানারহাটের বিস্তীর্ণ এলাকা সহ কাঁঠালগুড়ি চা বাগানে জলের জন্য হাহাকার পড়ে গিয়েছে। পর্যাপ্ত পানীয় জল না পেয়ে কাঁঠালগুড়ি চা বাগানের অন্তত পাঁচ হাজারের বেশি শ্রমিক ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের প্রাণ ওষ্ঠাগত। অন্যান্য কাজের জন্যও জল মিলছে না। জলস্তর কমে যাওয়ায়, পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ যে নর্দমায় বসানো পাইপ থেকে জল সংগ্রহ করতে বাধ্য হচ্ছেন এলাকাবাসী।
এলাকায় পানীয় জলের বিকল্প কোনও উৎস না থাকায় পিএইচই’র সরবরাহ করা জলই বাসিন্দাদের একমাত্র ভরসা। যা দীর্ঘদিন থেকে অকেজো থাকায় জল সমস্যা চরম আকার ধারণ করছে। এদিকে নর্দমা লাগোয়া পাইপ থেকে জল নেওয়ার ফলে বিভিন্ন জলঘটিত রোগ লেগেই রয়েছে বাসিন্দাদের। একই সমস্যা শুরু হয়েছে বানারহাটের আদর্শপল্লি এলাকায়। এখানকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, তাঁরাও পাঁচদিন ধরে নিয়মিত জল পাচ্ছেন না। এলাকার বাসিন্দারাই পিকআপ ভ্যান ভাড়া করে তাতে জলের ট্যাংকি বসিয়ে বাগান থেকে জল এনে জলের চাহিদা মেটাচ্ছেন। জলের সংযোগ লাইনে সমস্যার কারণেই তীব্র এই জলসংকট দেখা দিয়েছে।
কাঁঠালগুড়ি চা বাগানের বাসিন্দা সান্তারাম ওরাওঁ বলেন, ‘জলের সমস্যার জন্য কাজে যেতে পারি না। সারাদিনে কোন সময় জল মিলবে, আদৌও মিলবে কিনা, তার কোনও উত্তর নেই। বাধ্য হয়ে নর্দমায় গামলা পেতে জল ভরতে হয়।’ কাঁঠালগুড়ি চা বাগানের আরেক বাসিন্দা নবীন ছেত্রী বলেন, ‘আমাদের এখানকার নেতাদের বহুবার এই বিষয়ে জানিয়েছি, কিন্তু কোনও সুরাহা হয়নি।’
পাশাপাশি, বানারহাট শহরের আদর্শপল্লি এলাকার অন্তত পাঁচশোর বেশি বাসিন্দা জল সমস্যায় ভুগছেন। সেখানকার বাসিন্দা অশোক দে বলেন, ‘বানারহাটের এই এলাকায় ২৪ ঘণ্টার জন্য টাইমকলে জল পাওয়া যেত। এলআরপি মোড় সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দারা আমাদের এলাকার কল থেকেই জল ভরতেন। এখন এই এলাকার কলেও জল আসছে না। আমাদের এলাকার জলের সমস্যার সমাধান না হলে অন্যান্য এলাকার বাসিন্দাদেরও সমস্যা হবে।’
কাঁঠালগুড়ি চা বাগান প্রসঙ্গে চামুর্চি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সংগীত কামি বলেন, ‘এলাকায় জলের সমস্যা রয়েছে, জলের সমস্যা সমাধানে নতুন করে রিজার্ভার বানানো হয়েছে। পাইপলাইন পাতার কাজ বাকি রয়েছে, কাজ শেষ হলেই জলের সমস্যা মিটবে।’ বানারহাট শহরে জলকষ্ট প্রসঙ্গে বানারহাট ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান প্রবিকা বিশ্বকর্মা বলেন, ‘বানারহাটের বেশকিছু এলাকায় অনেকদিন থেকেই জলের সমস্যা রয়েছে। বিষয়টি পিএইচই দপ্তরে জানানো হয়েছে। সংশ্লিষ্ট দপ্তরের আধিকারিকরা ইতিমধ্যেই কাজ শুরু করেছেন। কিছুদিনের মধ্যেই সমস্যার সমাধান হবে।’