উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: রাজ্যের একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যহীন। সমস্যায় পড়ুয়ারা।এ বিষয়ে রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের কাছে জমা পড়েছিল বিস্তর অভিযোগ। এবার সেই অভিযোগে ইতি টানলেন রাজ্যপাল স্বয়ং। রাজভবন থেকে বৃহস্পতিবার এক বিবৃতি পেশ করা হয়। তাতে বলা হয়েছে, রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে এখন উপাচার্য নেই, সেখানে রাজ্যপাল তথা আচার্যই উপাচার্যের দায়িত্ব পালন করবেন।এই বিবৃতির প্রতিবাদে ফের একবার সরব হলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। শুক্রবার তিনি বলেন, ‘‘বাংলা প্রবাদকে তিনি মান্যতা দিলেন। যাহা চাল ভাজা, তাহাই মুড়ি। যিনি আচার্য, তিনিই উপাচার্য।’’
পশ্চিমবঙ্গে বর্তমানে ১৪টি বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যহীন। আর এতগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্তর্বর্তিকালীন উপাচার্য নিয়োগ যতদিন না করা হচ্ছে, ততদিন রাজ্যপাল উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। রাজভবনের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়েছে, যে সব বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রীরা বিভিন্ন কারণে অসুবিধায় পড়ছেন, তাদের সমস্যা সমাধান করবেন আনন্দ বোস। প্রয়োজনে ছাত্র ছাত্রীরা রাজ্যপালকে ফোনও করতে পারেন। পড়ুয়াদের ডিগ্রি, সার্টিফিকেট পেতে যাতে কোনরকম সমস্যা না হয় তাই এই সিদ্ধান্ত রাজভবনের। সংস্কৃত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য রাজকুমার কোঠারিকে পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়েরও উপাচার্যের দায়িত্ব দিয়েছেন রাজ্যপাল। অর্থাৎ এখন রাজ্যের মোট ১৭টি বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থায়ী উপাচার্য রয়েছেন।
এদিন সাংবাদিক বৈঠক করে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, ‘‘উপাচার্য নিয়োগ করে এবং না করে—দু’ভাবে নৈরাজ্য তৈরি করা হচ্ছে।কোন আইনের বলে উনি এটা করলেন আমি জানি না।আমি বিষয়টি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই। যিনি আচার্য, তিনিই আবার উপাচার্য। যাহা চালভাজা তাহাই মুড়ি! কোন আইনের বলে তিনি এমন করছেন, তা আমার মাথায় ঢুকছে না। আমরা আইনি পথে যাওয়ার কথা ভাবছি।’
রাজ্যপালের এহেন সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। নিন্দুকেরা বলছেন রাজ্যপাল উচ্চশিক্ষায় নিজের নিয়ন্ত্রণ কায়েম করতে চাইছেন। যদিও দেশের যেসব রাজ্যে বিরোধী দল শাসন করছে সেইসব রাজ্যে উচ্চশিক্ষায় রাজ্যপালদের সমস্যা তৈরি করা নতুন কিছু নয়। পশ্চিমবঙ্গ একাই নয়, এমনকি কেরল, তামিলনাড়ুতেও একই অভিযোগ করছেন পিনারাই বিজয়ন, এমকে স্টালিন। তবে ব্রাত্য বসুর বক্তব্য, ‘‘আমাদের রাজ্যের পরিস্থিতি সবচেয়ে ভয়ঙ্কর। রাজ্যপাল যা যা করছেন, মুখ্যমন্ত্রী, শিক্ষা দপ্তর কিচ্ছু জানে না।’’ এখন দেখার রাজ্যপাল বনাম শিক্ষামন্ত্রীর লড়াই কোনদিকে মোড় নেয়।