উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ শীতকাল হলেও মানা যেত, ভরা গ্রীষ্মের প্রখর গরমে এক অবাক করা ঘটনা প্রত্যক্ষ করছেন ক্রীড়া ব্যবসায়ীরা। তরতর করে বেড়ে গিয়েছে উইকেট বিক্রি। অথচ ব্যাট বল একেবারেই বিক্রি নেই বললেই চলে। আচমকা উইকেট বিক্রি বেড়ে যাওয়ায় যথেষ্ট চাহিদাও বেড়ে গিয়েছে এই ক্রীড়া সামগ্রীর। অনেকেই এই সুযোগে উইকেটের জোগান বৃদ্ধির কথা ভাবছেন। এই ঘটনা ডোমকলের। সূত্রের খবর, গোটা ডোমকল মহকুমায় প্রায় সাড়ে ৫০০ উইকেট বিক্রি হয়েছে গত তিন-চার দিনের মধ্যে। মাত্র কয়েক দিনে ৫০ টাকার উইকেট ৮০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে এবং হচ্ছে।
তাহলে কি খেলা হবে? ক্রিকেট নাকি অন্য খেলা? যে হারে আচমকা উইকেট বিক্রি বেড়েছে অনেকেই সেটাকে ব্যাঙ্গ করে বলছেন পঞ্চায়েত নির্বাচনে উইকেট পড়তে পারে তাই হয়ত উইকেটের বিক্রি বেড়েছে ডোমকলে। এই এলাকায় খেলার সরঞ্জাম বিক্রি হয় এমন একটি দোকানের মালিকের কথায়, উইকেট বিক্রি আচমকা বেড়ে গেলেও, ব্যাট বা বল বিক্রি হয়ইনি বলতে গেলে। তা হলে শুধু উইকেট বিক্রি কেন এত বাড়ল, সে প্রশ্নের জবাবে সবাই চুপ। তবে ঘটনাচক্রে, শনিবার ডোমকলে পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময় তৃণমূল এবং বাম-কংগ্রেসের সংঘর্ষের সময় অনেকের হাতেই উইকেট দেখা গিয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক ব্যবসায়ী বলছেন, ‘‘এই গরমে তো এখন ক্রিকেট খেলা হয়না বললেই চলে। গোটা পঞ্চাশেক উইকেট মজুত ছিল আমার দোকানে। সবই টেনিস বলে ক্রিকেট খেলার উইকেট। শনিবার সকালে ঘণ্টা খানেকের মধ্যেই সব বিক্রি হয়ে গিয়েছে। প্রথমে বুঝতে না পারলেও পরে বুঝলাম, এরা আদতে ক্রিকেটের নয়, রাজনীতির ময়দানের মাস্তান।’’ জেলার প্রবীণ ক্রীড়াবিদ ধীমান দাস বলছেন, ‘‘আদতে এখন মাঠের খেলা তো প্রায় উঠে গিয়েছে। সরঞ্জামগুলি এখন রাজনীতির খেলার মাঠে ব্যবহার হচ্ছে।’’
ডোমকল ব্লক তৃণমূলের সভাপতি হাজিকুল ইসলাম বলছেন, ‘‘দিনভর সামাজিক মাধ্যমে শনিবারের তাণ্ডবের ছবি ঘুরেছে। তাতে মুখগুলো দেখলেই বোঝা যাবে কারা উইকেট হাতে সে দিন ঘুরেছে।’’ তাঁর বক্তব্য, ‘‘ডোমকলের খুনের রাজনীতি তৃণমূলের আমলেই বন্ধ হয়েছিল। সিপিএম-কংগ্রেস সেটা ফেরাতে চাইছে। আর সেই জন্যই ‘উইকেট ফেলতে’ উইকেটের ব্যবহার করছে তারা।’’
তৃণমূল নেতার জবাবে ডোমকলের সিপিএমের এরিয়া কমিটির সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমানের বক্তব্য, ‘‘খেলা হবে বলে স্লোগান তো তোলাই হয়েছিল। তবে আমরা সেই স্লোগান তুলিনি, খেলার সরঞ্জামও রাজনীতির মাঠে ব্যবহার করি না। আমাদের কমরেডরা পতাকা বাঁধার জন্য যেটুক ডান্ডার প্রয়োজন হয়, সেটাই ব্যবহার করেছেন। খেলা হবে স্লোগান, কোদালের বাট, উইকেট এ সব তৃণমূলের সংস্কৃতি।’’ অনেক রাজনৈতিক নেতাই বলছেন, ‘‘উইকেট অস্ত্র হিসেবে ভয়ঙ্কর।’’