সৌরভ দেব, জলপাইগুড়িঃ নয়াবস্তিতে দিদির বাড়িতেই রবিবার বিকেলে পরিবারের সঙ্গে চলছিল জমিয়ে আড্ডা। প্রসঙ্গ ছিল ‘দ্য কেরালা স্টোরি’র শুটিং পর্ব। কীভাবে শুটিং হয়েছিল? কত দিন ধরে চলেছিল শুটিং? পারিবারিক সেই আড্ডার মাঝেই দেবী চৌধুরানি নিয়ে একটা সিনেমা তৈরির ইচ্ছে প্রকাশ করে ফেললেন বহু আলোচিত ‘দ্য কেরালা স্টোরি’র পরিচালক সুদীপ্ত সেন। শুধু দেবী চৌধুরানি নয়, জলপাইগুড়ি নিয়ে যে আজও তাঁর আবেগ ভালোবাসার জায়গা রয়ে গিয়েছে তা আর একবার স্পষ্ট হল। যখন জলপাইগুড়ির সঙ্গে জড়িয়ে থাকা তিস্তা নদীকে নিয়ে সিনেমা তৈরির স্বপ্ন দেখার কথা বললেন তিনি।
ছয় বছর পর তাঁর প্রাণের শহরে আসা। রয়েছেন দাদা মনোজ সেনের নিউটাউনপাড়ার ফ্ল্যাটে। তবে কোনও সিনেমার শুটিং বা শুটিংয়ের জায়গা দেখতে নয়। উদ্দেশ্য, স্রেফ দাদা-দিদিদের সঙ্গে সময় কাটানো আর ব্যস্ততার জীবনের মাঝে একটু বিশ্রাম নেওয়া। ভাবছেন, সোমবারই ঘুরে আসবেন দার্জিলিং। মুম্বই ফিরে ‘মাওবাদী আন্দোলনের ৫০ বছর নামে একটি নতুন ছবির কাজ শুরু করার পরিকল্পনা রয়েছে তাঁর।
রবিবার দুপুরেই জলপাইগুড়ি এসেছেন সুদীপ্ত। প্রায় সুদীপ্তর সঙ্গে নিজের শহরে ফিরেছেন দ্য কেরালা স্টোরির প্রোডাকশন ডিজাইনার অঙ্গনা সেনও। কাকা-ভাইঝি একসঙ্গে আসায় পরিবারের বাকি সদস্যরা আনন্দে ভাসছেন। এদিন সন্ধ্যায় তাঁদের পারিবারিক আড্ডা বসেছিল সুদীপ্তর দিদি রত্না সেন রায়ের বাড়িতেই। পারিবারিক নানা স্মৃতিচারণের গল্পের মাঝে উঠে এলে কেরালা স্টোরি প্রসঙ্গ। কীভাবে অঙ্গনা এই সিনেমাতে দায়িত্বের সঙ্গে শুটিং সেটগুলো তৈরি করেছিলেন কাকার মুখে সেই গল্পই শুনলেন বাড়ির সকলে।
শুধু তাই নয়, ছবি বাংলায় ব্যান করার পর কীভাবে তার আইনি মোকাবিলা করতে হয়েছিল, সেই অভিজ্ঞতা এদিন আড্ডার মাঝে পরিবারের সঙ্গে শেয়ার করলেন সুদীপ্ত। ছোটবেলার বেশ কয়েকটা বছর কেটেছে জলপাইগুড়ি শহরে। সেই সময় রায়কতপাড়াতে পৈতৃক বাড়িও ছিল। সেই বাড়িতে থেকেই জলপাইগুড়ি জিলা স্কুলে দুই বছর পড়াশোনা করেছেন। স্কুলের গা ঘেঁষেই চলে গিয়েছে তিস্তা নদী। কথা বলার সময় বোঝা গেল, তাঁর ছোটবেলার অনেক স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে তিস্তা এবং জুবিলি পার্ককে ঘিরে।
ঘরোয়া আড্ডা চলাকালীন ভাগ্নে তমোজিৎ তাঁর ছোট মামাকে প্রশ্ন করলেন, “তোমার তো ইচ্ছে ছিল, দেবী চৌধুরানির ওপর একটা সিনেমা করার। করবে না?’ তমোজিতের কথা শেষ না হতেই সুদীপ্ত বললেন, “তোকে সঙ্গে নিয়েই আমি দেবী চৌধুরানির ওপর সিনেমা করব। আমার তিস্তা নদীকে নিয়েও একটা সিনেমা করার ইচ্ছে আছে।’
সুদীপ্তর কথাতেই স্পষ্ট, তিনি আগামীতে তাঁর নিজের শহর জলপাইগুড়ির মাটিতেই সিনেমা করবেন। এদিন জলপাইগুড়ি আসা নিয়ে প্রশ্ন করলে তাঁর মন্তব্য, ‘দাদা-দিদিদের সঙ্গে ফোনে কথা বললেই নিজের জায়গায় স্মৃতিগুলো খুবই মনে পড়ে। কিন্তু কাজের চাপে আসা হয়ে ওঠে না। তার মধ্যে কেরালা স্টোরি নিয়ে প্রায় একটা বছর খুবই ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলাম। একটু বিশ্রাম নিতেই জলপাইগুড়ি এসেছি।’ আপাতত কেরালা স্টোরির বাঙালি পরিচালকের পরবর্তী গন্তব্য দার্জিলিং। তারপর মাওবাদীদের নিয়ে ছবি। পরবর্তীতে হয়তো দেবী চৌধুরানিও তিস্তা।