বর্ধমান: প্রেমিককে সঙ্গে নিয়ে স্বামীকে খুন করার পরিকল্পনা কষেছিলেন স্ত্রী। কিন্তু শেষমেশ বরাতজোরে প্রাণে বাঁচলেন স্বামী। ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে থেকে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে পূর্ব বর্ধমানের মন্তেশ্বরের লোহার গ্রামে। স্থানীয় ও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় ৯ বছর আগে মন্তেশ্বরের লোহার গ্রামের বাসিন্দা মণিরুলের বিয়ে হয় কালনার বুলবুলিতলা এলাকার তরুণী ডলির। তাঁদের সাত বছরের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। দিল্লিতে কাপড়ের দোকানে কাজ করতেন মণিরুল। তিন মাস আগে তিনি নিজের বাড়িতে ফিরে আসেন। বর্তমানে তিনি এলাকায় টোটো চালিয়ে সংসার চালান।
পরিবারের অভিযোগ, গতকাল গভীর রাতে মণিরুলকে ঠান্ডা দুধের সঙ্গে কিছু মিশিয়ে খাইয়ে তাকে ঘুমে আচ্ছন্ন করে হাত ও পা শক্ত করে বেঁধে দেয় স্ত্রী ডলি ও তাঁর প্রেমিক সাদ্দাম শেখ। এরপর দুজন মিলে মুখে বালিশ চাপা দিয়ে মণিরুলকে খুন করার চেষ্টা করে। কিন্তু মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচতে মণিরুলের আর্ত চিৎকারে ডলি ও তাঁর প্রেমিকের যাবতীয় পরিকল্পনা ফাঁস হয়ে যায়। চিৎকার শুনে পরিবারের লোকজন ঘরের দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকে হাত ও পা বাঁধা অবস্থায় মণিরুলকে উদ্ধার করে। পরে তারা একই ঘরের খাটের তলায় মাদুর চাপা দিয়ে লুকিয়ে থাকা ডলির প্রেমিক সাদ্দামকে দেখতে পেয়ে তাকেও পাকড়াও করে। এরপর শ্বশুরবাড়ির লোকজনের কাছে ধরা দিয়ে স্বামী মণিরুলকে খুনের পরিকল্পনার কথা স্বীকার করে নেন ডলি। তারপরই পরিবার পরিজন ও প্রতিবেশীদের ব্যাপক রোষের মুখে পড়ে ডলি বিবি ও তাঁর প্রেমিক।
খবর পেয়ে মন্তেশ্বর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে উত্তেজনা সামাল দিয়ে ডলি বিবির প্রেমিককে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। এদিকে, চিকিৎসার জন্য মণিরুলকে নিয়ে যাওয়া হয় মন্তেশ্বর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থকেন্দ্রে। পরিবারের দাবি, ধরা পড়ার পর ডলি ও সাদ্দাম স্বীকার করে, ফোনে তাদের আলাপ হয়েছিল। পরে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। প্রায় আড়াই বছর ধরে তাঁদের মধ্যে সম্পর্ক রয়েছে। এসডিপিও(কালনা) সপ্তর্ষি ভট্টাচার্য্য জানান, গোটা ঘটনায় দু’পক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে।