সানি সরকার, শিলিগুড়ি: এখনও পাহাড়ের রাস্তায় ভিড়টা কম নয়। বুকিংয়ের যে হার, তাতে প্রজাতন্ত্র দিবসের (Republic day) ছুটিতে পাহাড়ে ভিড় নিঃসন্দেহে বাড়বে। ওই সময় তুষারপাতের সম্ভাবনা থাকায়, নিশ্চিত হতে অনেকেই খোঁজখবর নিচ্ছেন। ফলে তাঁদের মধ্যে অনেকেই যে ওই সময় পাহাড়ে উঠবেন, তা নিয়ে সংশয় নেই। কিন্তু তারপর? জানুয়ারি মাসের শেষ সপ্তাহে প্রতিবছরই এমন প্রশ্ন ধাক্কা খায় পাহাড়ে। এমন প্রশ্নের সঙ্গে কালিম্পংয়ের (Kalimpong) ভাবনায় থাকে, আর কবে দার্জিলিংয়ের সঙ্গে সমানতালে চলা সম্ভব হবে? এই ভাবনা থেকেই প্রথমবার উইন্টার ট্যুরিজম ফেস্টিভালের (Winter tourism festival) আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (জিটিএ)। দার্জিলিংয়ের (Darjeeling) পাশাপাশি উৎসবের জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে কালিম্পংকেও। কালিম্পংয়ের ক্ষেত্রে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট অ্যাসোসিয়েশন অফ কালিম্পং (হোরাক)। দার্জিলিংয়ের চৌরাস্তায় ২৮ ও ২৯ এবং পরবর্তী দু’দিন কালিম্পংয়ে ফেস্টিভাল হবে।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্য তো বটেই, ঐতিহাসিক দিক দিয়ে দার্জিলিংয়ের থেকে কালিম্পং খুব একটা পিছিয়ে নেই। বরং সিল্ক রুটের মতো ঐতিহাসিক পথ রয়েছে কালিম্পংয়েই। কিন্তু পর্যটনের ক্ষেত্রে দার্জিলিং থেকে কার্যত শত যোজন দূরেই অবস্থান কালিম্পংয়ের। কিছুটা হলেও এই দূরত্ব ঘোচাতে উদ্যোগী হল জিটিএ (GTA)। তাই উইন্টার ফেস্টিভালের জন্য দার্জিলিং এবং কালিম্পং, পাহাড়ের দুই শহরকে বেছে নেওয়া হয়েছে।
জিটিএ সূত্রে জানা গিয়েছে, দার্জিলিংয়ে উৎসব হবে চৌরাস্তায়। এখানকার উৎসবের সূচনা করার কথা রয়েছে জিটিএর চিফ এগজিকিউটিভ অনীত থাপার। যথারীতি তুলে ধরা হবে পাহাড়ের স্থানীয় সংস্কৃতি এবং খাবার। এর জন্য বেশ কয়েকটি স্টল করার পরিকল্পনা রয়েছে জিটিএর।
অন্যদিকে, হোরাকের সহযোগিতায় ৩০ জানুয়ারি উইন্টার ফেস্টিভালের প্রদীপ জ্বলে উঠবে কালিম্পং টাউন হলে। এখানে দু’দিনের উৎসবের সূচনা করতে পারেন কালিম্পংয়ের বিধায়ক রুদেন সাদা লেপচা। উৎসবের সূচনালগ্নে না থাকতে পারলেও সমাপ্তি অনুষ্ঠানে থাকার কথা রয়েছে অনীতের। জিটিএর পর্যটন সচিব সোনম ভুটিয়ার বক্তব্য, ‘শুধু দার্জিলিং নয়, পর্যটনে কালিম্পংকেও তুলে ধরার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এর জন্য ফেস্টিভালের ক্ষেত্রে দুটি জায়গাকে বেছে নেওয়া হয়েছে।’
বিশেষভাবে কালিম্পংকে তুলে ধরতে হোরাকের তরফে রাজস্থান, গুজরাট, দিল্লি সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের পর্যটন সংস্থাগুলিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। কয়েকজন বিশিষ্ট ট্যুর অ্যান্ড ট্রাভেল ফোটোগ্রাফার উপস্থিত থাকতে পারেন। হোরাকের সভাপতি সিদ্ধান্ত সুদ বলছেন, ‘কালিম্পংয়ের ঐতিহাসিক গুরুত্ব তুলে ধরতে বিশিষ্টদের বিভিন্ন দ্রষ্টব্য স্থানে আমরা নিয়ে যাব।’ পরিকল্পনা মোতাবেক পরিকাঠামো উন্নয়নে নজর দিলে ভবিষ্যতে কালিম্পংও আলাদা মাত্রা পাবে বলে মনে করেন পর্যটন ব্যবসায়ী দেবাশিস চক্রবর্তী।