সানি সরকার, শিলিগুড়ি: রোদের হাসিতেই বাড়ছে কম্পন। টানা কয়েকদিন পর সূর্যের দেখা মেলায় আমজনতা স্বস্তি পেয়েছে বটে, কিন্তু সন্ধে হতে না হতেই কাঁপুনি বেড়েছে উত্তরের সর্বত্রই। রোদের তেজে মেঘ কাটতেই, রাতের তাপমাত্রার পতন অনায়াসে। তাপমাত্রা আরও নামায় আগামী তিনদিন ‘কোল্ড ডে’র সম্ভাবনার কথা জানিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর।
শৈত্যপ্রবাহের তেমন সম্ভাবনা না থাকলেও অস্বাভাবিক ঠান্ডা এবং ভারী কুয়াশার জন্য পাহাড় এবং সমতলের কিছু জায়গার জন্য বিশেষ সতর্কতা জারি করেছে আবহাওয়া দপ্তর। গতি নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি অতিসতর্কতার সঙ্গে গাড়ি চালানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে চালকদের। আবহাওয়া দপ্তরের সিকিমের কেন্দ্রীয় অধিকর্তা গোপীনাথ রাহা বলছেন, ‘পশ্চিমী হাওয়ার অস্তিত্ব এখনও রয়েছে। ফলে কিছু এলাকায় কুয়াশা যেমন রয়েছে, তেমনই মেঘের আস্তরণ কার্যত সরে যাওয়ায় বাধাহীনভাবে উত্তুরে হাওয়া বইছে। ফলে রাতের তাপমাত্রা কমছে। তাই বিশেষ সতর্কতা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।’
এ যেন নানা রংয়ের শহর। প্রতিটি বাড়ির ছাদে রং মিলান্তি। টানা কয়েকদিন পর রোদের দেখা মিলতেই কার্যত প্রতিটি বাড়ি এদিন হয়ে উঠেছিল ‘ধোপাখানা’। যে যেমন পেরেছেন জমানো পোশাক ধুয়েছেন খুশি মনে। সাতসকালে আকাশ ঝলমলে হয়ে ওঠায় শহরের পথগুলিও বৃহস্পতিবার ফিরে পায় পুরোনো ছন্দ। কিন্তু সন্ধের পর শীত-হাওয়ায় ফিরে আসে গত কয়েকদিনের কম্পন। শহরগুলিতে কুয়াশার তেমন দাপট না থাকলেও গ্রামীণ এলাকা যথারীতি সন্ধে হতেই ঢাকা পড়ে কুয়াশায়। পাহাড়ও মুখ ঢাকে কুয়াশার চাদরে। তাৎপর্যপূর্ণভাবে এদিন কালিম্পংয়ের (সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯.৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড) থেকে কোচবিহার (৭.৯ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড) ছিল শীতলতম। সূর্যের দেখা মেলায় দিনের তাপমাত্রা (যদিও স্বাভাবিকের থেকে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা অনেকটাই কম) এদিন কিছুটা বৃদ্ধি পায়। কিন্তু সন্ধে হতে না হতেই দাপট শুরু হয়ে যায় উত্তুরে হাওয়ার। ফলে জাঁকিয়ে শীতে কাঁপন ধরে আমজনতার।
এই কাঁপন শুক্রবার রাত থেকে আরও বাড়বে বলে আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস। যে কারণে শুক্র থেকে টানা তিনদিনের জন্য ‘কোল্ড ডে’র সম্ভাবনার কথা জানিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের নীচে নামলে এবং সর্বোচ্চ তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে পাঁচ ডিগ্রি কম থাকলে, ওইদিনকে শীতল দিন বা কোল্ড ডে হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। বৃহস্পতিবার উত্তরবঙ্গের একাধিক শহরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০-এর ঘরে থাকলেও, তা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অনেকটাই কমে যাবে বলে মনে করছেন আবহবিদরা, যা কিছুটা স্পষ্ট হয়েছে এদিন রাতের কাঁপুনিতে।