শান্ত বর্মন, দলগাঁও: দলগাঁও চা বাগানে ( Dalgaon Tea Garden ) আবার ফিরে এল ‘মানুষখেকো’ চিতাবাঘের আতঙ্ক। সোমবার দুপুর নাগাদ ওই এলাকায় চা গাছের পাশে মিলেছে এক মধ্যবয়স্কা মহিলার দেহ ( Death )। সেই দেহ ক্ষতবিক্ষত। দেখে প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, কোনও বুনো জন্তু সেই মহিলাকে খুবলে খেয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অনুমান, এটা কোনও চিতাবাঘেরই কীর্তি। দেহ উদ্ধারের পর প্রাথমিক তদন্ত সেরে পুলিশেরও মতামত সেরকমই। তবে এ ব্যাপারে এখনই স্পষ্ট করে কিছু বলতে চাইছে না বন দপ্তর। বনকর্তারা বলছেন, চিতাবাঘের কামড়ে ( Leopard Attack ) সেই মহিলার মৃত্যু হতে পারে। আবার কুকুরের আক্রমণেও এমনটা ঘটে থাকতে পারে।
চা বাগানে মৃতদেহ দেখতে পেয়ে স্থানীয়রাই খবর দেন পুলিশকে। পরে পুলিশ ও বন দপ্তরের বাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে সবকিছু খতিয়ে দেখে। জটেশ্বর ফাঁড়ির পুলিশ মৃতদেহটি উদ্ধার করে নিয়ে আসে। সেটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। জটেশ্বর ফাঁড়ির ওসি অমিত শর্মা বলেন, ‘একটি ক্ষতবিক্ষত মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মঙ্গলবার ময়নাতদন্ত করা হবে। এখনও তাঁর পরিচয় জানা যায়নি।’
স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, ওই মহিলাকে এলাকায় আগে দেখা যায়নি। তিনি কোথা থেকে এলেন কেউ জানে না। স্থানীয় বাসিন্দা গৌতম টোপ্পো বলেন, ‘গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত ওই মহিলাকে এলাকায় কেউ ঘোরাঘুরি করতে দেখেননি। তিনি কোথা থেকে এসেছেন তাও জানা নেই।’
চা মহল্লার প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, ওই মহিলাকে চিতাবাঘই খুবলে খেয়েছে। তাঁর হাত-পা সব ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন হয়ে ছিল। বুক ও পিঠের মাংসও খুবলে খাওয়া হয়েছে। সেই মহিলাকে চা বাগানে টেনে নিয়ে গিয়ে তাঁর দেহ খুবলে খেয়েছে চিতাবাঘ। এমনটা কিন্তু মনে করছেন দলগাঁও রেঞ্জের বনকর্মীরাও। তবে তাঁরা সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ খুলতে চাননি।
বন দপ্তর ও পুলিশের অনুমান, প্রায় ১২ ঘণ্টা আগেই ঘটনাটি ঘটেছে। রাতের অন্ধকারে হয়তো তিনি চিতাবাঘের সামনে পড়ে গিয়েছিলেন। স্থানীয়রা বলছেন, দু’দিন আগেই দলগাঁও চা বাগান থেকে এক গৃহস্থের শুয়োর চা বাগানে নিয়ে গিয়েছিল চিতাবাঘ। তাই গত কয়েকদিন ধরেই এলাকায় চিতাবাঘের আতঙ্ক ছিলই। এলাকার বাসিন্দা সুভাষিণী ওরাওঁ, গৌতম টোপ্পোরা একবাক্যে দাবি করেছেন, চিতাবাঘ ছাড়া এমন কাজ আর কেউ করতেই পারে না।
এদিকে, দলগাঁওয়ের রেঞ্জ অফিসার ধনঞ্জয় রায় বলেন, ‘দেহটি চিতাবাঘে খেয়েছে কি না তা আমরা জানি না। পুলিশের তদন্ত এবং ময়নাতদন্তের পর জানা যাবে।’ আর বন দপ্তরের জলপাইগুড়ি ডিভিশনের ডিএফও বিকাশ ভি-রও একই কথা। বলেন, ‘এই হত্যাকাণ্ড যে চিতাবাঘই ঘটিয়েছে, তা ময়নাতদন্ত না হলে বলা মুশকিল। কারণ কুকুরও সেটি খুবলে খেতে পারে।’