নকশালবাড়ি: গর্ভবতী অবস্থায় পেটে লাথি মেরেছিল বৌদি। সেই ঘটনার দু’মাস পরে মৃত সন্তানের জন্ম দিলেন মহিলা। অভিযুক্ত বৌদির পরিবারের বিরুদ্ধে নকশালবাড়ি থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের করলেন সেই মহিলার স্বামী। রবিবার এই ঘটনাটি ঘটেছে নকশালবাড়ি থানার অন্তর্গত খালবস্তি এলাকায়।
ঘটনার সূত্রপাত অবশ্য মাস দুয়েক আগে উত্তর রথখোলা এলাকায়। উত্তর রথখোলার বাসিন্দা নেহা যাদবের সঙ্গে বিয়ে হয় খালবস্তির তরুণ মানবেন্দ্র সরকারের। গর্ভবতী হওয়ার পর রথখোলায় নেহা নিজের মায়ের বাড়িতে চলে যান। অভিযোগ, রথখোলায় মায়ের বাড়িতেই নেহার সঙ্গে তাঁর বৌদি সুবর্ণা রায়ের পরিবারের সঙ্গে বিবাদ শুরু হয়। সেই বিবাদ চলাকালীন গত ২২ নভেম্বর রাতে নেহার পেটে লাথি ও ঘুসি মারেন তাঁর বৌদির পরিবারের সদস্যরা। তখন নেহা আট মাসের গর্ভবতী। মারধরের পর তাঁর পেটে তীব্র যন্ত্রণা শুরু হয়। তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। নেহাকে দ্রুত নকশালবাড়ি গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ এবং হাসপাতালে পাঠানো হয়।
সেই সময় যাবতীয় পরীক্ষানিরীক্ষা করে নেহার স্বামী জানতে পারেন যে, গর্ভাবস্থাতেই শিশুর মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। গর্ভবতী স্ত্রীকে এভাবে মারধর করায় তিনি গোটা ঘটনা লিখিতভাবে জানিয়ে সেই সময়ই পাঁচজনের বিরুদ্ধে নকশালবাড়ি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
মানবেন্দ্র জানান, সেই সময় চিকিৎসা করার পর স্ত্রী একটু সুস্থ হয়ে উঠেছিল। কিন্তু পেটে থাকা শিশুর শারীরিক পরিস্থিতি ঠিক নেই বলে চিকিৎসকরা আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন। গত ১০ ফেব্রুয়ারি প্রসবযন্ত্রণার পর মৃত অবস্থায় জন্ম হয় সেই শিশুর। নেহা এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর স্বামী বলেন, ‘সেদিন আমার স্ত্রীকে মারধর করার পরেই এমনটা হয়েছে। তাই পুনরায় খুনের অভিযোগ দায়ের করে শাস্তির দাবি আমি জানিয়েছি।’ নকশালবাড়ি থানার ওসি অনির্বাণ নায়েক জানিয়েছেন, ঘটনার তদন্ত চলছে।
এদিকে, নেহার দাদা উমেশ যাদবও ওই অভিযোগ মেনে নিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘সেদিন রাতে বোন ও আমার বৌয়ের ঝগড়া চলছিল। সেই সময় পাশের বাড়ি থেকে আমার শ্বশুরবাড়ির সকলে বোনের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। আমরা বহু চেষ্টা করেও ঝামেলা আটকাতে পারিনি।’ যদিও অভিযুক্ত বৌদি সুবর্ণা রায়ের বাবা খোকন রায় সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি জানান, ‘সব বানানো গল্প। ওই গর্ভবতী মেয়ের উপর কেউই হাত লাগায়নি। বরং আমার মেয়ে সুবর্ণা রায়ের উপর সকলে মিলে অত্যাচার করত। তাই মেয়েকে নিজ বাড়িতে রেখে তাদের বিরুদ্ধেই আমরা থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি।’