মাদারিহাট: বনবাসের পালা কাটছেই না সুন্দরের। মস্তি কেটে গিয়েছে ঠিকই। কিন্তু তাকে ‘পাহারা’ দিয়ে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার মতো কুনকি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।জলদাপাড়ার খুনি হাতি সুন্দরের মস্তির মেয়াদ শেষ হয়েছে কয়েকদিন আগেই। আর মাহুত পাওয়া না গেলেও সুন্দরের পাতাওয়ালা বাপি বর্মনের উপরেই ভরসা রাখছেন বনকর্তারা। তবে সমস্যা দাঁড়িয়েছে অন্য জায়গায়। বন দপ্তরের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, সুন্দরের পায়ের বাঁধন খুললেই যে সমস্যা কেটে যাবে, তা কিন্তু নয়। কয়েকমাস হয়ে গেল সুন্দরের এই বন্দিদশা চলছে। এবার বাঁধন খোলার পর ওকে জঙ্গলের পরিবেশ রপ্ত করাতে হবে। সেজন্য কয়েকদিন সুন্দরকে জঙ্গলে ঘোরাতে হবে। সেজন্য প্রয়োজন মাহুতের। সেই যোগ্য মাহুত খুঁজে পাওয়াটাই তো সমস্যাজনক। যদিও পুরোনো পাতাওয়ালা বাপিকে দিয়েই সেই কাজ করানো যাবে বলে মনে করছেন বনকর্তারা।
তবে সমস্যার এখানেই শেষ নয়। গত প্রায় ৬৮ দিন ধরে জঙ্গলের পরিবেশ থেকে সম্পূর্ণ বাইরে রয়েছে সুন্দর। সেইজন্য যখন ও জঙ্গলে ঘুরবে, তখন তার সঙ্গে গাইড হিসেবে অন্য কোনও কুনকিকে রাখতে হবে। তাও আবার যে কোনও কুনকিকে এই কাজে নিযুক্ত করলে চলবে না। এমন কোনও কুনকিকেই সেই ভার দিতে হবে, যে সুন্দরের থেকেও বেশি শক্তিশালী। যাতে সুন্দরের কোনও বেচাল দেখলে সে সামলাতে পারে। জলদাপাড়ায় সুন্দর নিজেই তো বলশালী বলে পরিচিত। তার থেকেও বলশালী কে? খুঁজতে খুঁজতে এক কুনকিকে পেয়েছিলেন বনকর্তারা। কিন্তু টারজান নামের সেই কুনকির এখন আবার মস্তি শুরু হয়েছে। ফলে তাকে দিয়ে তো আর এই কাজ হবে না। সেক্ষেত্রে অপেক্ষা করতে হতে পারে কবে টারজানের মস্তি শেষ হয়, সেজন্য।সমস্যা হল, টারজানের মস্তি শেষ হওয়া আবার সময়সাপেক্ষ। তাহলে কি সুন্দরকে আরও দীর্ঘদিন বন্দিদশাতেই কাটাতে হবে? উত্তরবঙ্গের মুখ্য বনপাল ভাস্কর জেভির সঙ্গে সুন্দরের বন্দিদশা নিয়ে কথা বলার জন্য ফোন করা হয়েছিল। কিন্তু তিনি ফোন ধরেননি। তবে বন দপ্তর সূত্রে খবর, যতক্ষণ পর্যন্ত সুন্দরের মাহুত না পাওয়া যাচ্ছে, ততদিন পাতাওয়ালা বাপিকে দিয়েই মাহুতের কাজ করানোর চেষ্টা চললেও সুন্দরকে একা তাঁর হাতে ছাড়ার ঝুঁকি নিতে নারাজ বনকর্তারা। সেইজন্য সুন্দরের গাইড হাতি টারজানকে সঙ্গে দিয়েই জঙ্গলের পথে পাঠানোর কথা ভাবা হচ্ছে।