হরিশ্চন্দ্রপুরঃ কাজ করেও মেলেনি একশো দিনের কাজের টাকা। ফলে সরকারের বিরুদ্ধে মানুষের ক্ষোভ রয়েছে। সেই ক্ষোভের ক্ষতে প্রলেপ দিতেই মুখ্যমন্ত্রী সম্প্রতি জেলা সফরের মধ্যে ঘোষণা করেছেন, কেন্দ্রের বকেয়া টাকা ভোটের আগেই দেবে রাজ্য সরকার। জবকার্ড হোল্ডারদের নথিপত্র পরীক্ষার দায়িত্ব মূলত প্রশাসনের। কিন্তু এখানেও ঝাঁপিয়েছে তৃণমূল। লাভের গুড়ের ঝোলা নিজেদের দিকে টানতে শাসকদলের নেতা-কর্মীরাই এখন শিবির করে একশো দিনের কাজের শ্রমিকদের নথি জমা নিতে শুরু করেছেন। হরিশ্চন্দ্রপুরে দলীয় কার্যালয়ের সামনে শিবির করেই এই নথি পরীক্ষার কাজ শুরু হয়েছে। এর জন্য আগে থেকে প্রচারও করা হচ্ছে। আশ্চর্যের বিষয়, প্রশাসনিক কাজ তৃণমূলের নেতারা খোলামেলাভাবে করলেও, তা নাকি জানাই নেই প্রশাসনের কর্তাদের। এনিয়েই উঠতে শুরু করেছে প্রশ্ন।
অনেকের দাবি, তবে কী প্রশাসনের কর্তারা নিজেদের দায়িত্ব এড়াতেই সবকিছু অস্বীকার করছেন? তৃণমূলের কি দলীয়ভাবে এই ক্যাম্প করার এক্তিয়ার রয়েছে? প্রশাসনিক প্রক্রিয়ায় দলের ভূমিকা নিয়েও উঠেছে প্রশ। যদিও তৃণমূল নেতাদের দাবি, তাঁরা প্রশাসনকে সাহায্য করছেন মাত্র। কিন্তু প্রশাসন বলছে, এই ধরনের ক্যাম্পের কথা তাঁদের জানা নেই। যা নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক।
এ প্রসঙ্গে হরিশ্চন্দ্রপুর এক বিডিও সৌমেন মণ্ডল জানান,‘এই ধরনের ক্যাম্পের কথা ব্লক প্রশাসন জানে না। কারা কীভাবে শ্রমিকদের ডকুমেন্টস নিচ্ছেন, সেই তথ্যও আমাদের কাছে নেই।’
যদিও তৃণমূলের ব্লক সভাপতি জিয়াউর রহমানের দাবি, ‘কেন্দ্র শ্রমিকদের সঙ্গে বঞ্চনা করছে। মানবিক মুখ্যমন্ত্রী তাদের কথা ভেবেছেন। প্রশাসনকে সাহায্য করার জন্যই আমরা দলের নির্দেশে শিবির করছি।’
অপরদিকে বিজেপির সাধারণ সম্পাদক দেবব্রত পালের অভিযোগ, ‘দুর্নীতির জন্য ১০০ দিনের কাজের টাকা বন্ধ রেখেছে কেন্দ্র। এখন ৫০ দিনের কাজের টাকা দেওয়ার নাম করে তৃণমূল নেতাদের পেট ভরবে। পুনরায় প্রকৃত উপভোক্তারা বঞ্চিত হবেন।’
হরিশ্চন্দ্রপুর-১ ব্লকের অন্তর্গত হরিশ্চন্দ্রপুর সদর এলাকায় তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ের সামনে এই ক্যাম্প করা হয়েছে ব্লক তৃণমূলের তরফে। অন্যদিকে মহেন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের সামনেই হচ্ছে আরেকটি ক্যাম্প। যে ক্যাম্পগুলিতে ভিড় জমিয়েছেন ১০০ দিনের কাজের শ্রমিকরা। বকেয়া টাকার ডকুমেন্টস তাঁরা প্রশাসনের পরিবর্তে জমা করছেন শাসকদলের নেতা-কর্মীদের কাছে।
কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে এই ক্যাম্পের যৌক্তিকতা কোথায়? যেখানে যে সব শ্রমিকের এফটিএ করা রয়েছে তাদের সরাসরি টাকা ঢুকবে অ্যাকাউন্টে। তবে কি তৃণমূল শুধুমাত্র প্রচারের জন্য দলীয় ক্যাম্প থেকে প্রশাসনিক কাজের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে। না কি রয়েছে কাটমানির অঙ্ক। উঠেছে প্রশ্ন?