গঙ্গারামপুরঃ পাঁচদিন আগে ভিনরাজ্য থেকে বাড়ি ফিরেছেন। বাড়ি ফিরেই স্থানীয় এলাকায় কাজ করতে গিয়ে দেওয়াল চাপা পড়ে মৃত্যু হল এক রাজমিস্ত্রির। রবিবার বিকেলে মর্মান্তিক দুর্ঘটনাটি ঘটেছে গঙ্গারামপুর থানার ফুলবাড়িতে। মৃতের নাম আমিনুর মিয়াঁ (২৮)।
তপন থানার হজরতপুর গ্রামের বাসিন্দা আমিনুর মিয়াঁ। পরিবারে রয়েছেন বয়স্ক বাবা, মা, স্ত্রী সহ দুই মেয়ে ও এক ছেলে। পরিবারের একমাত্র উপার্জনশীল ব্যক্তি ছিলেন আমিনুর। পরিয়ায়ী শ্রমিকের কাজ করেই সংসার চলত। কয়েকদিন আগে ভিনরাজ্য থেকে তিনি বাড়ি ফিরেছেন। বাড়ি ফেরার পর আমিনুর গঙ্গারামপুর থানার ফুলবাড়ির প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী আতাবুদ্দিন চৌধুরীর বাড়িতে নতুন বিল্ডিং তৈরির কাজে যোগ দেন।
রবিবার সকাল থেকে আতাবুদ্দিনের বাড়িতে যন্ত্র লাগিয়ে পুরোনো মাটি ও ইটের দেওয়ালের পাশে পোল তোলার জন্য মাটি খোঁড়া হচ্ছিল। বিকেলে আমিনুর সহ কয়েকজন শ্রমিক ও মিস্ত্রি গর্তে নেমে ফিতে দিয়ে মাপজোখ করছিলেন। সেসময় মাটি ও পুরোনো ইটের দেওয়াল ধসে পড়ে। দেওয়ালের নীচে চাপা পড়েন আমিনুর। মুহূর্তের মধ্যে যন্ত্র দিয়ে আমিনুরকে বের করার চেষ্টা করা হয়। বিষয়টি জানাজানি হতে এলাকায় হইচই পড়ে যায়। শুরু হয় ছোটাছুটি। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় ফুলবাড়ি ফাঁড়ি ও গঙ্গারামপুর থানার বিশাল পুলিশবাহিনী। খবর দেওয়া হয় দমকলে। এরপর পুলিশ ও দমকলকর্মীদের তৎপরতায় প্রায় সাত ফুট গর্ত থেকে আমিনুরকে উদ্ধার করে গঙ্গারামপুর সুপারস্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে জানিয়ে দেন।
মৃতের আত্মীয় হামিদুর রহমান বলেন,‘আমিনুর বেশিরভাগ সময় ভিনরাজ্যে কাজ করত। পাঁচদিন আগে ভিনরাজ্য থেকে বাড়ি ফিরেছিল। দুইদিন আগে ফুলবাড়িতে শ্রমিকের কাজে যোগ দিয়েছিল। কাজ করার সময় দেওয়াল চাপা পড়ে তার মৃত্যু হয়েছে। এতে আমরা শোকাহত।’
উদয় গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান অসীতবরণ কুণ্ডুর বক্তব্য,‘তপন থানার হজরতপুর গ্রামের আমিনুর নামে একটি ছেলে আমাদের ফুলবাড়ি এলাকায় শ্রমিকের কাজ করতে এসেছিল। কাজ করার সময় হঠাৎ মাটি ও পুরোনো ইটের দেওয়াল ভেঙে পড়ে। এই দুর্ঘটনায় তাঁর মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনায় আমরা শোকস্তব্ধ। যেহেতু আমিনুর আমাদের এলাকায় কাজ করতে এসেছিল। সেজন্য আমাদের তরফে সমস্তরকম সাহায্য করা হবে পরিবারকে।’
গঙ্গারামপুর পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য বিজয় গুপ্তা বলেন,‘দেওয়াল চাপা পড়ে এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। আমরা এতে শোকাহত।’