তপনঃ দিনের আলোয় নদীবাঁধের মাটি কেটে পাচার হচ্ছে। নদী ভাঙনের আশঙ্কায় আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন নদী তীরবর্তী মানুষজন। অভিযোগ, দিনের আলোয় নদীবাঁধের মাটি কাটা হলেও প্রশাসনের কোনও হেলদোল নেই।
পুনর্ভবা নদীর জল কমতেই তপন ব্লকের বিভিন্ন ঘাট থেকে অবৈধভাবে তোলা হচ্ছে বালি। শুধু নদীর চর থেকে বালি তোলা হচ্ছে এমনটা নয়, পাচারকারীদের নজর পড়েছে নদীরবাঁধেও। অভিযোগ, ভোর থেকে তপনের বাসুরিয়া, সুতইল সহ আশেপাশের এলাকায় মেশিন লাগিয়ে পুনর্ভবা নদীর বাঁধ থেকে মাটি কাটা হচ্ছে। নদীবাঁধ এলাকা থেকে অবাধে মাটি কাটায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন এলাকার মানুষজন। বিরোধীদের অভিযোগ, শাসকদলের মদতে বালি-মাটি কাটা হচ্ছে। কিন্তু প্রশাসন নীরব।
আরএসপি নেতা আজিজুর রহমান বলেন, ‘এতদিন পুকুর চুরি, মিড-ডে মিল চুরি হত। এখন নদীবাঁধের মাটিও চুরি হচ্ছে। এতে প্রশাসনের কোনও ভ্রূক্ষেপ নেই। প্রশাসন সম্পূর্ণ উদাসীন। নদীর পাড় থেকে মাটি কাটা বন্ধ হওয়া প্রয়োজন। নয়তো আগামীদিনে আমাদের ভুগতে হবে।’
বিজেপি নেতা গণেশ সরকারের বক্তব্য, ‘ভোর থেকে নদীর চর ও বাঁধ থেকে মাটি কাটা শুরু হয়। নদীবাঁধের মাটি কাটার ফলে তীরবর্তী এলাকার মানুষজন আতঙ্কে রয়েছেন। বন্যা আসলে মুহূর্তে বাড়িঘর ভেঙে যাবে। বিষয়টি আমরা প্রশাসনকে জানিয়েছি। কিন্তু কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। শাসকদলের মদত ছাড়া এভাবে কেউ মাটি কাটার সাহস দেখাবে না।’
যদিও তপন ব্লক তৃণমূলের সভাপতি সমীর রাহা বলেন, ‘মাটি কাটা নিয়ে বিরোধীরা তৃণমূলের নামে অপপ্রচার করছে। তাদের অভিযোগ ভিত্তিহীন। যেসব জায়গায় অবৈধভাবে মাটি কাটা হচ্ছে সেই এলাকাগুলিতে প্রশাসন হানা দিচ্ছে।’
এদিকে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নদী তীরবর্তী এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, ‘রাত আড়াইটে থেকে মাটি কাটা শুরু হয়। ট্র্যাক্টর ও মাটি কাটার শব্দে ঘুম হয় না। যেভাবে নদীর ধার থেকে মাটি কাটা হচ্ছে, বন্যার সময় বাঁধ ভেঙে ক্ষতির মুখে পড়তে হবে। আমরা আতঙ্কে রয়েছি।’
রাজ্য নদী বাঁচাও কমিটির আহ্বায়ক তুহিনশুভ্র মণ্ডল বলছেন, ‘যেভাবে নদীর ধার থেকে মাটি কাটা হচ্ছে তাতে ভয়ংকর দিন আসতে চলেছে। নদীখাত বদলে যাবে। নদীর বাস্তুতন্ত্র ধ্বংস হবে। এভাবে মাটি কাটা বন্ধ করতে সর্বস্তরের প্রশাসনকে এগিয়ে আসতে হবে।’