প্রসেনজিৎ দাশগুপ্ত, নয়াদিল্লিঃ হিংসার আগুনে পুড়ছে মণিপুর। বাড়ছে মৃত্যু মিছিল। জ্বলছে ঘরবাড়ি, সাধারণ মানুষের অথবা কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর। অশান্ত মণিপুরে ভয়াবহ প্রভাবিত সাধারণ মানুষের জীবন, ব্যতিক্রম নন পুলিশ কর্মীরাও৷ বিশেষ সূত্রে জানা গেছে, এই হিংসার জেরেই মণিপুর পুলিশের ১২০০ কর্মী, আধিকারিক নিজেদের ডিউটিতে যোগ দিতে নারাজ। কোনওভাবেই তাঁরা উপদ্রুত এলাকায় ডিউটি করবেন না বলে জানিয়েছেন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে৷ রাজ্য সরকারের শীর্ষ স্তর থেকে এই ১২০০ পুলিশ কর্মীকে বারবার আশ্বস্ত করা হয়েছে, এমনকি তাদের পছন্দ মতো জায়গায় ডিউটি দেওয়ার প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে৷ কিন্তু তারপরেও গোটা রাজ্যের অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতির মধ্যে এই পুলিশ কর্মীরা নিজেদের কাজে যোগ দিতে তীব্র অনীহা প্রকাশ করেছেন বলে মণিপুর পুলিশ সূত্রে দাবি করা হয়েছে৷
প্রশ্ন উঠেছে কেন মণিপুর পুলিশের বিভিন্ন স্তরে কর্মরত এই ১২০০ কর্মী তাদের ডিউটি করতে নারাজ? সূত্রের দাবি, এই পুলিশ কর্মীদের মধ্যে রাজ্যে বিবাদমান কুকি এবং মেইতে সম্প্রদায়ের মানুষেরা আছেন৷ এরা প্রত্যেকেই মনে করছেন ভিন্ন সম্প্রদায়ের এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষার কাজে তাদের ডিউটি দেওয়া হলেই তাদের পাশাপাশি গোটা পরিবারের প্রাণনাশের আশঙ্কা তৈরি হবে৷ প্রতিপক্ষ সম্প্রদায়ের এলাকায় ডিউটি করতে গেলেই তারা আক্রান্ত হবেন, যা মণিপুরে এখন নিত্যনৈমিত্তিক বিষয়, এমন সম্ভাবনা প্রবল৷ সেই আক্রমণ প্রতিহত করতে গিয়ে যদি প্রতিপক্ষ শিবিরের কারও প্রাণহানি হয় তাহলে তার খেসারত দিতে হবে মারাত্মক ভাবে, যেখানে গুলি চালানো পুলিশ কর্মীর পরিবারের সদস্যদের উপরেও পাল্টা প্রাণঘাতী হামলার তীব্র আশঙ্কা থাকছে৷ ডিউটিতে অনুপস্থিত পুলিশ কর্মীদের একটা বড় অংশের এমনই ভাবনা৷
অগ্নিগর্ভ মণিপুরের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতির লক্ষ্যে যখন সবথেকে বেশি পুলিশ ফোর্স প্রয়োজন, ঠিক সেই সময়েই ১২০০ পুলিশ কর্মীর অনুপস্থিতির খবরে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকও, এমনই দাবি সরকারি সূত্রের৷ কিভাবে গোটা পরিস্থিতির মোকাবিলা করা যায়, তা ভেবে দেখার জন্য রাজ্য পুলিশের শীর্ষ আধিকারিকদের মৌখিক পরামর্শ দেওয়া হয়েছে নয়াদিল্লির তরফে৷ এই নির্দেশ পেয়েই ডিউটিতে অনুপস্থিত পুলিশ কর্মীদের কাজে ফেরানোর জন্য তত্পর হয়েছেন রাজ্য পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্তারা৷ তারপরেও পরিস্থিতির পরিবর্তন হয়নি বলেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রের দাবি৷ এই পরিস্থিতিতে মণিপুরের পরিস্থিতি নিয়ে যথেষ্ট উদ্বিগ্ন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক৷