নকশালবাড়ি ও খড়িবাড়ি: ভোটের আগে পানীয় জলের দাবিতে সরব হয়েছেন নকশালবাড়ি ও খড়িবাড়ি ব্লকের ডাকুয়াজোত গ্রামের বাসিন্দারা। মানঝা নদীর তীরে অবস্থিত এই গ্রামের একাধিক কুয়োর জল ইতিমধ্যেই শুকিয়ে গিয়েছে। দুই ব্লকের সীমান্তে অবস্থিত এই গ্রামে প্রায় পাঁচশো পরিবারের বসবাস। গ্রীষ্মকাল আসতেই এলাকাজুড়ে শুরু হয়েছে জলের সংকট। ভোটের আগে পানীয় জলের দাবিতে সরব হয়েছেন বাসিন্দারা। পানীয় জলের পাশাপাশি রাস্তাঘাটের বেহাল দশা নিয়েও এলাকায় ক্ষোভ রয়েছে। যেহেতু দুই ব্লকের সীমান্ত এলাকা, তাই নানা সরকারি পরিষেবা থেকেও বঞ্চিত হচ্ছেন তাঁরা।
ডাকুয়াজোতের বাসিন্দাদের ভরসা এখন সরকারি কুয়োর জল। তাও তেমন কুয়োর সংখ্যা মাত্র দুটি। এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, কুয়োর সামনে জলের জন্য ভিড় জমিয়েছেন মহিলারা। খোদ তৃণমূল কংগ্রেসের পঞ্চায়েত সদস্যা পিংকি মিঞ্জ কুয়োতে বালতি ভরে জল তুলছেন। তাঁকে ঘিরেও সোমবার বাসিন্দারা ক্ষোভ দেখান। তিনি বলেন, ‘আমরা নকশালবাড়ির বাসিন্দা কিন্তু জল আনতে হয় খড়িবাড়ি থেকে। তাই সকলেই ভোটের আগে জলের দাবিতে একজোট হয়েছেন।’ স্থানীয়রা জানালেন, মাসছয়েক আগে পিএইচই কর্মীরা প্রায় ৫০০ বাড়িতে নল লাগিয়ে দিয়ে গিয়েছিলেন। প্রথম এক সপ্তাহে ঠিকমতো জল এসেছিল। কিন্তু তারপরে আর আসছে না। এই নিয়ে বিডিও, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিকে একাধিকবার অভিযোগ জানালেও কেউ কর্ণপাত করেননি।
ক্ষোভ রয়েছে রাস্তা নিয়েও। গ্রামেরই আরেক বাসিন্দা বাহাদুর তামাং বলেন, ‘পাশেই মানঝা নদী। দিনরাত এই নদী থেকে ট্র্যাক্টরবোঝাই করে বালি-পাথর তোলা হচ্ছে। ভারী গাড়ির চাকায় গ্রামের রাস্তাঘাট ভেঙে চুরমার হয়ে গিয়েছে। পুলিশকে জানিয়েও কোনও লাভ হচ্ছে না।’
পঞ্চায়েত সদস্য পিংকির অভিযোগ, ‘ট্র্যাক্টরের শব্দে গ্রামের মানুষ ঘুমোতে পারছেন না। আমরা এই নিয়ে বিডিওকে বলেছি। কিন্তু এই অবৈধ খননের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।’
সমস্যার কথা মেনে নিয়েছেন হাতিঘিসা তৃণমূল কংগ্রেসের অঞ্চল সভাপতি তথা নকশালবাড়ি পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ আসরফ আনসারি। তিনি বলেন, ‘ডাকুয়াজোতে পানীয় জল ও অবৈধ খননের সমস্যা রয়েছে। এই নিয়ে আমরা অভিযোগও পেয়েছি। বিডিওকে জানানো হয়েছে। খুব দ্রুত ওই এলাকায় আমরা পানীয় জলের সমস্যার সমাধান করব।’ অবৈধ খননের বিষয়টিও খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।