নয়াদিল্লি: দেশীয় শিক্ষাব্যবস্থায় গৈরিকীকরণের অভিযোগ উঠেছে ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর এডুকেশনাল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিংয়ের(এনসিইআরটি)-র বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবারই এই মর্মে সরব হয়ে পাঠ্যবই থেকে তাঁদের নাম বাদ দেওয়ার জন্য এনসিইআরটি অধিকর্তা ডি পি সাকলানিকে চিঠি দেন দেশের প্রথমসারির ৩৩ জন শিক্ষাবিদ। শিক্ষার গৈরিকীকরণের অংশ হতে চান না বলে সোচ্চার হয়েছেন তাঁরা। এ দিন তারই পালটা পদক্ষেপে এনসিইআরটি’র পাঠক্রম পরিবর্তন ইস্যুর সমর্থনে সরব হলেন সরকার ঘনিষ্ঠ দেশের ৭৩ জন শিক্ষাবিদ। সরকারের উদ্দেশ্যে খোলা বার্তা পাঠিয়ে তাঁরা জানিয়েছেন, পাঠক্রম পরিবর্তন যুক্তিসঙ্গত ও যথোপযুক্ত। অহেতুক এ নিয়ে কেন্দ্র এবং এনসিইআরটির বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে বলেও অভিযোগ জানিয়েছেন তাঁরা।
সরকারের সমর্থনে সরব ৭৩ শিক্ষাবিদরা দাবি করেছেন, ২০০৬ এর পর গত ১৭ বছর ধরে শিক্ষাক্রমে কোন পরিবর্তন আনা হয়নি। ১৭ বছর দীর্ঘ সময় এবং এই সময়ে দেশ প্রগতির পথে অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছে। ছাত্র ছাত্রীদের পুরানো পাঠক্রমের বোঝা হালকা করার জন্য অত্যন্ত গবেষণা করে এই বইগুলো তৈরি করা হয়েছে। সেখানে হয়েছে যথাযথ পরিমার্জন ও পরিবর্ধন। তাঁরা এও দাবি করেছেন, পূর্বতন সরকারের জমানায় এনসিআরটির পাঠ্যপুস্তকে লেখক বাছাইয়ের প্রক্রিয়াও মোদী সরকারের জমানায় অনেক স্বচ্ছ এবং যুক্তিসঙ্গত হয়েছে।
এছাড়াও ৭৩ জন শিক্ষাবিদের দাবি, যুক্তিসঙ্গত কারণেই এনসিইআরটির পাঠ্যক্রমের সংশোধন-পরিমার্জন করা হচ্ছে। এর নেপথ্যে গবেষণালব্ধ তথ্যসূত্র, বিশেষজ্ঞদের অভিমত, অতীত এবং বর্তমানের মেলবন্ধনে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নির্বাচন এবং দেশহিতে প্রযোজ্য বহু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াদি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। অহেতুক এই পাঠ্যক্রমের নিন্দা ও সমালোচনা করে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে কেন্দ্র সরকারের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন একশ্রেণির উচ্চাভিলাষী শিক্ষাবিদ, যা দেশের পঠনপাঠনের স্বাভাবিক সংস্কৃতিকে প্রভাবিত করছে বলেও অভিযোগ জানান দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে জড়িত অধ্যাপক ধনঞ্জয় সিং, শান্তিশ্রী পণ্ডিত, মনোজ তিওয়ারি, অধ্যাপক সঞ্জয় শ্রীবাস্তবের মতো ৭৩ জন শিক্ষাবিদ।
প্রসঙ্গত, কয়েকদিন আগেই সিলেবাস বিকৃতির অভিযোগে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের বই থেকে তাঁদের নাম বাদ দেওয়ার জন্য এনসিইআরটির অধিকর্তাকে চিঠি দিয়েছিলেন রাষ্ট্রবিজ্ঞানের দুই বিশেষজ্ঞ সুহাস পালশিকর এবং যোগেন্দ্র যাদব। সংশ্লিষ্ট চিঠিতে দুই বিশিষ্ট গবেষক লিখেছিলেন, তাঁদের সঙ্গে পরামর্শ না করেই সিলেবাস বদলে হওয়া হয়েছে। এমন বেশ কয়েকটি অধ্যায় বাদ দেওয়া হয়েছে যা পড়ুয়াদের জানা জরুরি ছিল। তাই ওই সমস্ত বইয়ে নিজেদের নাম রেখে তাঁরা কেউই বিড়ম্বনায় পড়তে চান না। এর পরেই প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে সরব হন ভানুপ্রতাপ মেহতা, সব্যসাচী বসু রায়চৌধুরী, রাজীব ভার্গব, দ্বৈপায়ন ভটাচার্য, কান্তিপ্রসাদ বাজপাই, মালিনী ঘোষ, মণীশ জৈন-এর মতো ৩৩ জন শিক্ষাবিদ। তারই পালটা পদক্ষেপে এবার এনসিইআরটি-র পাঠ্যক্রম পরিবর্তনের পক্ষে সরব হলেন ৭৩ জন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ।