আসানসোলঃ আসানসোল জেলা হাসপাতালে ‘রিসেপশনিস্ট’-এর পদে চাকরি দেওয়ার নাম করে প্রতারণার অভিযোগ উঠল এক সংস্থার বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার সকালে রিসেপশনিষ্ট পদে চাকরীর ইন্টারভিউ দিতে আসলে প্রতারণার বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। স্বাভাবিক ভাবেই চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। চাকরি দেওয়ার নাম করে দুই যুবতীর কাছ থেকে কয়েক হাজার টাকা করে হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ। ঘটনায় বিস্মিত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
জানা গিয়েছে, রানিগঞ্জ থানার অধীন গীর্জাপাড়ার রাজপাড়ার বাসিন্দা প্রতারিত দুই যুবতীর নাম সোমা জয়সওয়ারা ও নেহা জয়সওয়ারা। এক চাকরি প্রদানকারী এক সংস্থার তরফে দু’জনের কাছ থেকে এই চাকরির জন্য ৪ ও ৫ হাজার টাকা অনলাইনের মাধ্যমে নেওয়া হয়েছে বলে এদিন তারা দাবি করেন। ঐ দুই যুবতীকে এই চাকরির জন্য গত ১২ অগাস্ট চাকরি প্রদানকারী সংস্থার পক্ষ থেকে ‘লেটার অফ ইনটেন্ট’ দেওয়া হয়েছে। চিঠিতে ঐ কোম্পানির কর্পোরেট অফিস হিসেবে মহারাষ্ট্রের পুনের একটি ঠিকানা উল্লেখ করা হয়েছে। পাশাপাশি কোম্পানির ব্রাঞ্চ অফিস হিসেবে এই রাজ্যের দক্ষিণ ২৪ পরগণার ডায়মন্ডহারবারের একটি ঠিকানা লেখা আছে। তবে যে চিঠি ডাক মারফত দুই যুবতীর কাছে এসেছে, তা মেদিনীপুরের একটি পোস্ট অফিস থেকে স্পিড পোস্টে পাঠানো হয়েছে।
এই চিঠিতে তাদের ‘রিসেপশনিস্ট’ পদে যোগদান বা জয়েনিং ডেট আগামী ১ সেপ্টেম্বর বলা হয়েছে। মাসিক বেতন ১৫ হাজার টাকা লেখার পাশাপাশি তারা কি কি সুবিধা পাবেন সহ একাধিক তথ্য দেওয়া হয়েছে। কাজে যোগ দেওয়ার আগে, ইন্টারভিউ দিতে মঙ্গলবার আসানসোল জেলা হাসপাতালে আসতে বলা হয় দুই যুবতীকে। সেই মতো এদিন সকালে তারা আসানসোল জেলা হাসপাতালে আসেন। তারা এমারজেন্সি বিভাগের কাছে ফেসিলিটি ম্যানেজারের অফিসে গিয়ে ইন্টারভিউয়ের কথা বলেন ও ঐ চিঠি দেখান। চিঠি দেখেই অফিসের কর্মীরা বুঝতে পারেন যে, সব ভুয়ো। কেন না, সরকারি হাসপাতালে এই রকমভাবে চাকরি হয়না। খবর পেয়ে ফেসিলিটি ম্যানেজারের অফিসে আসেন হাসপাতালের ডেপুটি সুপার কঙ্কন রায়। তিনি সব শুনে ঐ দুই যুবতীকে বলেন, তারা প্রতারিত হয়েছেন। সবকিছুই জাল বা ভুয়ো। তারা যেন গোটা বিষয়টি জানিয়ে থানায় অভিযোগ করেন। পুলিশই ব্যবস্থা নেবে।
পরে ঐ দুই যুবতী বলেন, সোশাল মিডিয়ায় থেকে তারা ঐ কোম্পানির কথা জানতে পারেন ১৫ দিন আগে। তখনই তাদেরকে এই চাকরির অফার দেওয়া হয়। পরে মোবাইল ফোনে কোম্পানির লোকেরা আমাদের সঙ্গে কথা বলে। অনলাইনে ব্যাঙ্ক একাউন্টে আমরা টাকা পাঠাই। বলা হয়েছিল মাসে ১৫ হাজার টাকা দেওয়া হবে, সঙ্গে অন্য সুবিধাও। দিন সাতেক আগে ডাক মারফত এই চিঠি আসে। সোমবার ফোন করে আমাদেরকে ইন্টারভিউ দিতে জেলা হাসপাতালে আসতে বলা হয়েছিল। সেই মতো আমরা এদিন এসে জানতে পারি যে, গোটা বিষয়টি ভুয়ো। আমরা প্রতারিত হয়েছি। যে সব নম্বর থেকে আমাদেরকে ফোন করা হয়েছিলো, সেগুলো ব্লক করে দেওয়া হয়েছে। দুই যুবতী আরও বলেন, আমরা পরিবারের সঙ্গে কথা বলে থানায় অভিযোগ দায়ের করব।
জেলা হাসপাতালের সুপার ডাঃ নিখিল চন্দ্র দাস বলেন, আমরা বিষয়টি পুরো জানা নেই। ডেপুটি সুপার দেখেছেন। তবে এতটুকু বলতে পারি, এইভাবে সরকারি হাসপাতালে চাকরি পাওয়া যায়না। যুবক যুবতীরা যেন এই ব্যাপারে সতর্ক থাকেন।