শুভজিৎ দত্ত, নাগরাকাটা: এখানে দু’চোখের পাতা এক হয় নদীর কুলুকুলু ধ্বনিতে। ঘুম ভাঙে জানা অজানা পাখপাখালির কিচিরমিচির শব্দে। পাহাড়, নদী ও জঙ্গল ঘেরা দু’দন্ড শান্তিতে জিরিয়ে নেওয়ার ঠিকানা হিসেবে ঝালংয়ের জলঢাকা উপত্যকার নয়া পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করল ধৌলে। স্থানীয়দের উদ্যোগে লোকচক্ষুর অন্তরালে লুকিয়ে থাকা অনিন্দ্য সুন্দর প্রাকৃতিক স্থানটিকে পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে। এই প্রয়াসের প্রথম ধাপ হিসেবে সেখানে একটি ভিউ পয়েন্ট তৈরি করেছেন ধৌলে বনবস্তির বাসিন্দারা।
এলাকাটি প্যারেন কম্পাউন্ড বস্তির কাছাকাছি। ইতিমধ্যেই সেখানে পর্যটকদের আনাগোনাও শুরু হয়ে গিয়েছে। মালবাজার রুট দিয়ে এলে ১৭ নম্বর জাতীয় সড়কে যে রাস্তাটি চালসা পার করে খুনিয়া মোড় থেকে ঝালংয়ের দিকে চলে গিয়েছে সেই পথে এগোলেই পৌঁছোনো যাবে প্যারেনে। এরপর ডেস্টিনেশন হতেই পারে রূপসী ধৌলে। জলঢাকা অফবিট টুরিজম অ্যাসোসিয়েশনের কো-অর্ডিনেটার প্রণয় বরাইলি জানান, সরকারি সহযোগিতা পেলে ধৌলে যে পর্যটকদের কাছে দ্রুত একটি অন্যতম আকর্ষণের স্থানে পরিণত হয়ে উঠবে তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এককথায় চোখধাঁধানো। গোবিন্দ প্রধান নামে এক স্থানীয় বাসিন্দার বক্তব্য, পর্যটকটরা এখানে এলে যে নিরাশ হবেন না তা হলফ করে বলতে পারেন। সেকারণেই স্থানীয়রা ভিউ পয়েন্টটি তৈরি করেছেন। এখন দরকার শুধু প্রচার। কলকাতার সুচরিতা রায় নামে এক পর্যটক জানান, না এলে জানতামই না এমন এক স্বর্গও এখানে লুকিয়ে আছে। প্রকৃত অর্থেই অসাধারণ।
খুনিয়া থেকে চাপরামারির জঙ্গলের মাঝ দিয়ে যে রাস্তাটি সোজা চলে গিয়েছে সেটাই গিয়ে ঠেকে গরুবাথান ব্লকের একাধিক জনপদে। একে একে রাস্তার পাশে পড়ে কুমাই, রঙ্গো, দলগাঁও, ঝালং, প্যারেন, গৈরিগাওঁ, তুংসুক, গোদক, চিসাং, তোদে, তালা, পুমসি, সুমেসু, তাংদার মতো গ্রাম। সৌন্দর্যের ডালি উপুড় করে থাকা জলঢাকা উপত্যকার একেকটি পাহাড়ি এলাকা যেন এ বলে আমায় দেখ তো ও বলে আমায়। ঝালং ও আশপাশের স্থানগুলিতে এখনও পর্যন্ত ৩৬-৩৭ টি হোম স্টেও গড়ে উঠেছে। সাধারণত সেপ্টেম্বর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত এখানে পর্যটনের ভরা মরশুম। বর্তমানে ওই রাস্তাটি নতুন করে নির্মাণের কাজ চলছে।