উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: রাজ্যে ভয়াবহ আকার নিয়েছে ডেঙ্গি। পরিস্থিতি মোকাবিলায় নবান্নে করা হল উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক। সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীর উপস্থিতিতে সমস্ত জেলার জেলাশাসক, জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিক, কলকাতা পুরসভার কমিশনার এবং স্বাস্থ্যকর্তারাদের নিয়ে করা হল এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে।ডেঙ্গি রুখতে এদিনের বৈঠকে বলা হল একগুছ সতর্কতা মূলক নির্দেশিকা। আর নির্দেশিকা না মানলে নেওয়া হবে কড়া পদক্ষেপ বলে জানাল নবান্ন।
বেশ কয়েকদিন ধরেই রাজ্যের প্রায় প্রতিটি জেলায় কম বেশি বৃষ্টি হচ্ছে।ফলত বৃষ্টির জমা জল থেকে ডেঙ্গি প্রকোপ বেড়ে যাওয়ার এক বিপুল সম্ভবনা আছে। কারণ জমা জলই ডেঙ্গিবাহী মশার আঁতুড়ঘর। এই পরিস্থিতিতে যদি সতর্কতামূলক নির্দেশিকা না মানা হয় তাহলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে কড়া মনোভাব প্রদর্শন করবে নবান্ন বলে জানান মুখ্যসচিব।সামনেই দুর্গা পুজা, তাই পুজো কমিটিগুলিকে নজরে রাখতে বলা হয়েছে রাস্তায় যাতে কোনভাবেই জল না জমে।ডেঙ্গি নিয়ে জারি করা নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, ডেঙ্গির ‘হটস্পট’ চিহ্নিত করে সেইসব জায়গায় লাগাতার করতে হবে সাফাই অভিযান। সঙ্গে প্রয়োগ করতে হবে কীটনাশক।যাতে মশার লার্ভা মারা যায়।শহর ও সংলগ্ন এলাকার যে যে বাজার আছে সেখানে নিয়মিত করতে হবে পরিষ্কার।নজরে রাখতে হবে নর্দমাগুলি।সেখানে যাতে জল জমে না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।খেয়াল রাখতে হবে হাসপাতালগুলিতেও।রাজ্যের সব হাসপাতাল চত্বরে যাতে জল, আবর্জনা জমে না তার জন্য নিয়মিত অভিযান চালানো হবে।ডেঙ্গির ‘হটস্পট’ এলাকা চিহ্নিত করে এবং ঘিঞ্জি বস্তি এলাকায় বিতরণ করতে হবে মশারি।
অন্যদিকে জেলা পরিদর্শকের নেতৃত্বে একটি করে দল নিয়মিত সরকারি এবং বেসরকারি হাসপাতালগুলি পরিদর্শন করবে এবং সেখানকার ডেঙ্গি পরিস্থিতি খতিয়ে দেখবে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলিকেও সরকারি নির্দেশিকা মেনে চলতে হবে।২৪ ঘণ্টা সমস্ত সরকারি কেন্দ্রে ডেঙ্গি পরীক্ষার বন্দোবস্ত করা হচ্ছে। ডেঙ্গি মোকাবিলার ক্ষেত্রে রোগ নির্ধারণের উপর জোর দিচ্ছে সরকার যাতে দ্রুত রোগ নির্ধারণ করে সঠিক চিকিৎসা শুরু করা যায়। তাতেই মৃত্যু ঠেকানো যাবে। সঙ্গে যে সব রোগীর অন্য অসুস্থতা রয়েছে, তাদের চিকিৎসায় বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া হবে।পাশাপাশি সমস্ত সরকারি দপ্তর যারা ডেঙ্গি মোকাবিলার সঙ্গে যুক্ত তাঁদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। যতদিন না পর্যন্ত রাজ্যে ডেঙ্গি পরিস্থিতি উন্নতি হচ্ছে, ততদিন তাঁরা ছুটি নিতে পারবেন না।
রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে ডেঙ্গি নিয়ে কোন পরিসংখ্যান না দেওয়া হলেও বেসরকারি সূত্রে জানা যাচ্ছে, প্রতিদিন ২৫০ থেকে ৩০০ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হচ্ছেন। ডেঙ্গি পরিস্থিতি সবচেয়ে ভয়াবহ আকার নিয়েছে মুর্শিদাবাদ, নদিয়া, উত্তর ২৪ পরগনা এবং কলকাতায়। পাল্লা দিয়ে সংখ্যা বাড়ছে শিলিগুড়ি এবং ব্যারাকপুরেও।