ডালখোলাঃ দারিদ্রের সঙ্গে লড়াই করে শুধুমাত্র ইচ্ছে ও অদম্য জেদের উপর ভর করেই সর্ব ভারতীয় ডাক্তারি প্রবেশিকা পরীক্ষায় সাফল্য ছিনিয়ে আনল দরিদ্র কৃষক পরিবারের সন্তান মিনাজুর রহমান। আর্থিক সমস্যার কারণে পাঁচ বছরের ডাক্তারি কোর্স কি করে সম্পন্ন করবে তা নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই চিন্তায় পড়েছে মিনাজুরের পরিবার। অর্থের যোগানের অভাবে মাঝপথে ছেলের চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্নে ছেদ পড়বে না তো? এমনই আশঙ্কায় দিন কাটছে মিনাজুরের পরিবারের।
উত্তর দিনাজপুর জেলার করনদিঘি ব্লকের বাজারগাঁও ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রত্যন্ত গ্রাম আন্ধারিয়া। কৃষক মহম্মদ খলিলুর রহমানের ছেলে মিনাজুর রহমান এবার বসেছিলেন সর্বভারতীয় ডাক্তারির প্রবেশিকা পরীক্ষায়। এবারে ৬৪০ নম্বর পেয়ে নিট পরীক্ষায় সফল হয়েছে কৃষকপুত্র মিনাজুর। মিনাজুরের বাবা খলিলুর রহমান একজন প্রান্তিক কৃষক। মিনাজুরের মা রুলেখা খাতুন। পেশায় আশা কর্মী। পরিবারে তিন ছেলে ও তিন মেয়ে। সংসারে অভাব লেগেই থাকে। নুন আনতে পান্তা ফুরানোর দশা। এত দারিদ্রতার মাঝেও নিট পরীক্ষায় মিনাজুরের নজরকাড়া ফলে গর্বিত গ্রাম।
মিনাজুর জানায়, ছোটবেলা থেকেই তাঁর স্বপ্ন চিকিৎসক হওয়া। মাধ্যমিক পাশ করার পর থেকেই এই লক্ষ্যেই নিজেকে প্রস্তুত করেছে। সে কারণেই মিলেছে সফলতা। মিনাজুরের অল ইন্ডিয়া র্যাঙ্ক ৯৯৯৮৷ ওবিসি র্যাঙ্ক ৩৮৪৭। প্রাপ্ত ৬৪০ নম্বর।
মিনাজুরের গ্রামেই আরও এক কৃতীছাত্র সফল হয়ে ডাক্তারির সর্বভারতীয় প্রবেশিকা পরীক্ষায়। বাজারগাঁও ১ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার এই কৃতিছাত্রের নাম ফয়জান রেজা। নিট পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বর ৬৫৩। অল ইন্ডিয়া র্যাঙ্ক ৬১৮১। ওবিসি র্যাঙ্ক ২১৭৩। ফয়জানের বাবা স্থানীয় একটি সরকারি মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক। মা গৃহবধু। মা সরিফা আকতারি জানান, “ও বরাবরই ভালো ছাত্র ছিল। ওর বাবা-ই ওকে গাইড করত। এবারেই উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেছে। প্রথম বারেই নিট সফল করায় আমরা অত্যন্ত খুশি।” ফয়জান রেজার লক্ষ্য ভবিষ্যতে চিকিৎসক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করা।