উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: পাটনায় বিরোধীদের মেগা বৈঠকের পরই জোটে ফাটলের সুষ্পষ্ট ইঙ্গিত সামনে চলে এল। সৌজন্যে অবশ্য অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টি। কংগ্রেসের সঙ্গে আপের বিরোধ সর্বজনবিদিত, কংগ্রেসের ভোট কেটেই আপের উত্থান বলে মনে করে রাজনৈতিক মহলের একাংশ। দিল্লি হোক বা পাঞ্জাব দুই জায়গাতেই বাস্তব এটাই। ফলে এই দুই দলের মিল হওয়াটাই খানিকটা অস্বাভাবিক। বৈঠকের আগে আপের বক্তব্যেও এমনটা ইঙ্গিত ছিল। তারা জানিয়ে দেয়, দিল্লিতে আমলাদের বদলি ইস্যুতে কেন্দ্রের অধ্যাদেশের বিরোধীতায় বৈঠকে যদি ঐক্যমত্য না হয়, তাহলে তাঁরা বৈঠক থেকে বের হয়ে আসবে। যদিও তেমনটা হয়নি। বৈঠকে শেষ অবধিই ছিলেন কেজরিওয়াল, রাঘব চাড্ডারা। কিন্তু প্রেস কনফারেন্সে দেখা যায়নি আপ নেতাদের। পরে বিবৃতি দিয়ে তাঁরা জানিয়ে দেয়, পাটনার বৈঠকে ১৫টি দল উপস্থিত ছিল। তাদের মধ্যে ১২টি দলের রাজ্যসভায় প্রতিনিধি আছে। দিল্লির কালা অর্ডিন্যান্স নিয়ে ১১টি দল জানিয়েছে তারা রাজ্যসভায় সরব হবে, প্রতিবাদ করবে, আপের পাশে দাঁড়াবে। কেবলমাত্র কংগ্রেস চুপ থেকেছে। আপের বিবৃতিতে এও লেখা হয়েছে, ‘কংগ্রেসের উদ্দেশ্য নিয়েই আমাদের সন্দেহ রয়েছে। এখন তারা ঠিক করুক, দিল্লির মানুষের পাশে দাঁড়াবে নাকি নরেন্দ্র মোদীর পাশে থাকবে।’
আপের এই বিবৃতি সামনে আসার পরই বিরোধী জোটের অনেকর মধ্যেই কানাঘুষো শুরু হয়ে যায়। বৈঠকের আহ্বায়ক নীতিশ কুমার বা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়রা যতই ঐক্যের ছবি দেখানোর চেষ্টা করুন না কেন, সেটা যে সবটা নয় তা মনে করছেন অনেক বিরোধী নেতাই। ফলে কংগ্রেস-আপ বিরোধের সম্ভাবনাটা বৈঠকের পরও জিইয়ে থাকল বলেই মনে করা হচ্ছে। একই ভাবে তেলেঙ্গানার শাসক দল ভারত রাষ্ট্র সমিতির সঙ্গেও কংগ্রেসের জোট হওয়া কঠিন বলেই মনে করা হচ্ছে।
সম্প্রতি দিল্লিতে আমলাদের বদলি সংক্রান্ত যাবতীয় ক্ষমতা নিজের হাতে নিতে উদ্যোগী হয় কেন্দ্র। যার বিরোধীতা করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় আপ। সুপ্রিম কোর্টও জানিয়ে দেয় আমলাদের বদলি সংক্রান্ত ক্ষমতা থাকবে নির্বাচিত রাজ্য সরকারের হাতেই। এরপরই অধ্যাদেশ জারি করে আমলাদের বদলির বিষয়টি নিজের হাতে রাখে কেন্দ্র। যা নিয়ে দেশজুড়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে দেখা করে সমর্থন জোগাড়ের চেষ্টা করছেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল। যাতে অন্তত রাজ্যসভায় কেন্দ্রের এই অধ্যাদেশকে আটকে দেওয়া যায়। কেজরিওয়াল সমর্থন চেয়ে দেখা করেছিলেন কংগ্রেস নেতৃত্বের সঙ্গেও। কিন্তু কংগ্রেস এনিয়ে এখনও কিছু জানায় নি। আপ নেতৃত্বের দাবি, কংগ্রেস এক্ষেত্রে তাদের পাশে না থাকলে কংগ্রেসের সঙ্গে জোটে তাদের সায় থাকবে না।