মালবাজারঃ ডায়াগনস্টিক কেন্দ্রের (diagnostic center) বিরুদ্ধে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ তুলে কেন্দ্রটিতে তলা ঝুলিয়ে দিলেন এক তৃণমূল নেতা (Accused Trinamool leader)। শুক্রবার ঘটনাটি ঘটেছে মালবাজারে। অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা মালবাজার পুরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার। তাঁর অভিযোগ, এক মুমুর্ষ রোগীর সিটি স্ক্যান করতে ইচ্ছাকৃতভাবে ঢিলেমি করা হয়েছে। এই ঘটনায় এলাকায় শোরগোল পড়ে যায় এলাকায়। যদিও কাউন্সিলারের করা অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন ডায়াগনস্টিক কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ। পরবর্তীতে পুলিশি হস্তক্ষেপে দুপুরের পর ফের কেন্দ্রটি খোলে। ঘটনাকে কেন্দ্র করে শহরের রাজনৈতিক মহলেও আলোড়ন পড়েছে।
মাল শহরের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার সুরজিৎ দেবনাথ। সুরজিৎ এর বক্তব্য, “বৃহস্পতিবার রাতে আমার এক বন্ধু সায়ন সাহা বাইক অ্যাক্সিডেন্ট করেন। তাঁকে মাল হাসপাতালে ডাক্তার দেখাই। তারপর জরুরী ভিত্তিতে ঐ ডায়াগনস্টিক কেন্দ্রে সিটি স্ক্যান করাতে নিয়ে আসি। অনলাইন ব্যবস্থার মাধ্যমে স্ক্যানের অর্থও মিটিয়ে দিই। তবু আমাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হয়। অর্থ প্রদানের নিশ্চয়তা দেখানো সত্বেও পরিষেবা প্রদানে ঢিলেমি করা হয়”। সুরজিৎ এর দাবি, “রোগীর সঙ্গে এ ধরনের অমানবিক ঘটনা নিয়ে আলোচনা করতেই শুক্রবার সকালে ফের ঐ কেন্দ্রে যাই। কেন্দ্রে মালিকপক্ষের তরফে যুক্তিসঙ্গত জবাব না পেয়ে বাধ্য হয়ে কেন্দ্রের দরজা বন্ধ রাখি। তবে জরুরী পরিষেবা চালু রাখতেই বলেছিলাম। সন্ধ্যায় প্রশাসনের সর্বস্তরে অভিযোগ জানিয়েছি”।
ডায়াগনস্টিক কেন্দ্রের মালিক প্রশান্ত দাস ও কাজল দত্ত কাউন্সিলরের তোলা যাবতীয় অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন। মালিকপক্ষের বক্তব্য, “আমরা বহু বছর ধরে রোগীদের সবসময় মানবিকভাবেই পরিষেবা দিই। এক্ষেত্রেও রাতেও জরুরী ভিত্তিতে দ্রুত যাবতীয় পরিষেবাই দেওয়া হয়েছিল। কোনও রূপ ঢিলেমি বা দুর্ব্যবহারের ঘটনা ঘটে নি। আমাদের কাছে যাবতীয় তথ্যপ্রমান রয়েছে। আমরা শুক্রবারের সকালের ঘটনার বিষয়গুলি আমাদের আইনি পরামর্শ বিভাগকে জানাচ্ছি। তারাই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন। কর্মকাণ্ডের জেরে শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত রোগীরা পরিষেবার থেকে বঞ্চিত হন”।
এদিকে দুর্ঘটনাগ্রস্ত রোগীর দাদা সুমন সাহা দুপুরে মাল থানায় ঐ ডায়াগনস্টিক কেন্দ্রের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগও দায়ের করেন। ঘটনাকে কেন্দ্র করে শহরের রাজনৈতিক মহলেও আলোড়ন ছড়িয়েছে। মাল শহর তৃণমূল কংগ্রেস কমিটির সভাপতি অমিত কুমার দে বলেন, শুধুমাত্র বাড়তি অর্থের জন্য নয়। মানবিকভাবেও রোগীদের পরিষেবা প্রদান করতে হয়। না হলেই ক্ষোভ ছড়ায়। নিয়ম মোতাবেক ঐ ডায়াগনস্টিক কেন্দ্রটি পরিচালিত হয় কিনা তাও দেখা দরকার। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি অবশ্য শাসকদলের কাউন্সিলারের এহেন কর্মকাণ্ডের দিকে আঙ্গুল তুলেছে। বিজেপির মাল শহর মণ্ডল কমিটির সভাপতি নবীন সাহা বলেন, অভিযোগের বিষয়টি বিচার্য। তবে কাউন্সিলারের এভাবে তালা মারার ঘটনা নিন্দনীয়। সিপিএমের মাল এরিয়া কমিটির সম্পাদক রাজা দত্ত বলেন, কাউন্সিলার প্রশাসনিক মহলেই অভিযোগ জানাতে পারতেন। সেখানে উনি হঠকারী ভাবেই এ ধরনের তালা মারার ঘটনা ঘটালেন।