আয়ুষ্মান চক্রবর্তী, আলিপুরদুয়ার: মানুষ যদি রয়েল বেঙ্গল টাইগার (Royal Bengal Tiger) হত, তাহলে কীভাবে সমাজে চলত? মানুষের সঙ্গে কীভাবে ছবি তুলত, মোমো খাওয়া সহ আরও দৈনন্দিন নানা বিষয়ের সঙ্গে পরিচিত হত? এমনই অভিনব বিষয় পারফরমেন্স আর্ট-এর মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলছেন আলিপুরদুয়ার (Alipurduar) এবং কোচবিহারের (Cooch Behar) চার শিল্পী। নিজেদের অবশ্য শিল্প অনুশীলনকারী বলতেই পছন্দ করেন তাঁরা। প্রোজেক্টির তাঁরা নাম দিয়েছেন ‘টাইগার জিন্দা হ্যায়’। যেখানে বাঘের চরিত্রকে পরীক্ষামূলকভাবে দেখানো হয়েছে। সেইসঙ্গে বাঘকে রূপক হিসেবে নেওয়া হয়েছে। দীর্ঘ প্রায় এক মাস ধরে আলিপুরদুয়ার জেলার বিভিন্ন প্রান্তে ‘ইনস্ট্যান্ট পাবলিক আর্ট এনগেজমেন্ট’-এর এই কাজ চলছে।
উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর বন দপ্তর সূত্রে ট্র্যাপ ক্যামেরায় ওঠা রয়েল বেঙ্গল টাইগারের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখা যায়। সেই সময় মাথায় এসেছিল বাঘ যদি মানুষ হত তাহলে কীভাবে চলত। সেই বিষয়টাই তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে।
মানুষ টাইগার রূপে কখনও মোমো খেয়ে কিউআরএ পেমেন্ট করছে, পর্যটকদের সঙ্গে ছবি তুলছে। আবার কখনও আলিপুরদুয়ার প্রশাসনিক ভবন ডুয়ার্সকন্যা, কংগ্রেস ভবন, কলেজ হল্ট, মাধব মোড়, নিউটউনে মানুষ বাঘ সেজে রাস্তায় লিখছে ‘টাইগার জিন্দা হ্যায়’। কালচিনি ব্লকের গারোপাড়াতে গিয়ে চা মহল্লার ছেলেমেয়েরাই একজনকে নানারকম রং দিয়ে বাঘ সাজিয়েছিলেন। অনেক জায়গায় তাঁদের ধন্যবাদ দেওয়া হয়েছে। আবার অনেক জায়গায় তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ভিখারি ভেবে কেউ কেউ টাকাও দিয়েছিল। বাঘকে নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে এই উদ্যোগ নেওয়া বলে জানিয়েছেন উদ্যোক্তারা।
গুয়াহাটি আর্টস এবং ক্র্যাফট কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র সিদ্ধান্ত পাটোয়া বলেন, ‘বাঘ চরিত্র নিয়ে আমরা এক্সপেরিমেন্ট করেছি জেলার বিভিন্ন প্রান্তে গিয়ে।’ সেইসঙ্গে লাইভ ইনস্ট্যান্ট পাবলিক এনগেজমেন্ট-এর মাধ্যমে মানুষ বাঘ হলে কী করত এবং মানুষের কী মতামত সেটা তুলে ধরা হয়েছে। একটি অডিও-ভিডিও ডকুমেন্টেশন কাজ চলছে। কিছুদিনের মধ্যে শেষ হবে।’
বাঘ সাজা অনিমেষ সরকার বলেন, ‘আমি নিজেই বাঘ সেজেছিলাম। একদম অন্যরকম অভিজ্ঞতা। একটি টোটোকে বাঘের ছবি এঁকে সাজানো হয়েছে।’ এক খুদের অভিভাবক বলেন, ‘একটি অভিনব বিষয়। খুব ভালো লাগছে।’