মোস্তাক মোরশেদ হোসেন, বীরপাড়া: হাতির আক্রমণে মৃত্যুর পাশাপাশি চিতাবাঘের আক্রমণেও (Leopard Attack) মৃত্যুর ঘটনা বাড়ছে। বুধবার সন্ধ্যায় ফের ফালাকাটার (Falakata) দলগাঁও চা বাগানে এক বৃদ্ধার গলার নলি ছিঁড়ে নিল চিতাবাঘ। এনিয়ে ৫ বছরে মাদারিহাট-বীরপাড়া ও ফালাকাটা ব্লকে চিতাবাঘের আক্রমণে মৃত্যু হল ১১ জনের। এঁরা প্রত্যেকেই চা বাগানের বাসিন্দা। এছাড়াও আহত হয়েছেন কয়েক ডজন। ঘটনায় চাপ বাড়ছে শাসকদলের ওপর। এমনকি এনিয়ে জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের সহকারী সভাধিপতি তথা তৃণমূল মহিলার রাজ্য সম্পাদক সীমা চৌধুরী বন দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদার ভূমিকায় ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন।
সীমা বলেন, ‘মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদাকে বহুবার ফোন করেছিলাম। একদিনও রিসিভ করেননি। হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ করেও সাড়া পাইনি। আমি বর্তমানে অনারারি ওয়াইল্ডলাইফ পদে আছি কি নেই, সেটাও জানি না। কারণ দীর্ঘদিন ধরে পদটির পুনর্নবীকরণ করা হয়নি।’ এবিষয়ে মন্ত্রীকে ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
প্রতিটি ঘটনার পর বন্যপ্রাণীর হানা রোধে জনপ্রতিনিধিরা পদক্ষেপের আশ্বাস দিলেও বাস্তবে কিছুই করতে পারছেন না তাঁরা। একথা স্বীকারও করছেন তৃণমূল নেতারা। তাই বন্যপ্রাণীর হানায় মৃত্যুর ঘটনায় তৃণমূলের ওপরই চাপ বাড়ছে। এদিকে বন দপ্তরও ৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দিয়ে হাত ধুয়ে ফেলতে চাইছে। ১০ জানুয়ারি দলগাঁও চা বাগান ঘেঁষা বীরপাড়া চা বাগানে চিতাবাঘের আক্রমণে ৯ বছর বয়সি একটি শিশুর মৃত্যু হয়। সেই ঘটনায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা গড়ালেও চিতাবাঘ ধরা পড়েনি। কারণ চিতাবাঘ ধরতে খাঁচা পাতা হলেও টোপ হিসেবে ছাগল মেলেনি।
আলিপুরদুয়ার (Alipurduar) জেলা পরিষদের বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষ দীপনারায়ণ সিনহার সাফ বক্তব্য, ‘মানুষ ক্ষুব্ধ হবে এটাই স্বাভাবিক। কিছু টাকা ক্ষতিপূরণ দিয়েই দায়িত্ব শেষ হয় না।’ তিনি একাধিকবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বন্যপ্রাণীর আক্রমণে মৃত্যু নিয়ে সাধারণ মানুষের ক্ষোভের কথা জানিয়েছেন বলে দাবি করেছেন। অন্যদিকে, বন দপ্তরের রেঞ্জ স্তরের আধিকারিকরা মন্তব্য না করলেও নীচুতলার কর্মীদের ক্ষোভ, মাদারিহাট, দলগাঁও, লঙ্কাপাড়া রেঞ্জের বিটগুলিতে বনকর্মীর সংখ্যা হাতেগোনা। ফলে একপ্রকার ‘ফাঁকা মাঠে গোল’ দিচ্ছে হাতি ও চিতাবাঘ।