মোস্তাক মোরশেদ হোসেন, বীরপাড়া: সাম্মানিক না বাড়ায় ক্ষোভ রয়েছে। তারপরেও মমতাতেই আস্থা, বলছেন রাজ্যের পার্শ্বশিক্ষকরা। এ রাজ্যে পালাবদলের পর পার্শ্বশিক্ষকদের ব্যাপারে পদক্ষেপ করায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (CM Mamata Banerjee) প্রতি কৃতজ্ঞ তৃণমূলি পার্শ্বশিক্ষকরা। ২০১১ সালের পর থেকে মুখ্যমন্ত্রী কী কী করেছেন, তার ফিরিস্তি দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল পার্শ্বশিক্ষক, শিক্ষাকর্মী ও শিক্ষা সহায়ক সমিতি।
সংগঠনের রাজ্য কমিটির কার্যনির্বাহী সভাপতি শেখ রোমিউল ইসলাম জানান, বাম আমলে পার্শ্বশিক্ষক নিয়োগে এনসিটিই’র বিধি মানা হয়নি। তাই যে পার্শ্বশিক্ষকদের উচ্চমাধ্যমিকে ৫০ শতাংশ নম্বর ছিল না, তাঁদের রবীন্দ্রমুক্ত বিদ্যালয় থেকে ফের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় বসার সুযোগ দেওয়া, সবেতন ডিএলএড প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা ইত্যাদির সুযোগ করে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এছাড়া, স্কুল সার্ভিস কমিশন এবং প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগে পার্শ্বশিক্ষকদের ১০ শতাংশ সংরক্ষণের সুযোগও পেয়েছেন তাঁরা। পাশাপাশি মহিলা পার্শ্বশিক্ষকদের জন্য ১৮০ দিনের মাতৃত্বকালীন ছুটি ও ৪২ দিনের মিসক্যারেজ লিভ চালু করা হয়েছে।
সাম্মানিক না বাড়ানো নিয়ে পার্শ্বশিক্ষকদের ক্ষোভের কথা বুধবারই উত্তরবঙ্গ সংবাদে প্রকাশিত হয়। ২০১১ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রতিশ্রুতি দিয়েও রক্ষা করেননি বলে ক্ষোভপ্রকাশ করেছিলেন পার্শ্বশিক্ষক আহ্বায়ক মঞ্চের আহ্বায়ক ভগীরথ ঘোষ। এদিন ভগীরথকে তোপ দেগে রোমিউলের মন্তব্য, ‘ভগীরথ মিথ্যে কথা বলছেন। ২০১১ সালে ওই সংগঠনের জন্মই হয়নি। ২০১০ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পশ্চিমবঙ্গ পার্শ্বশিক্ষক সমিতির অনশন মঞ্চে গিয়েছিলেন।’ ফোন রিসিভ না করায় এ নিয়ে এদিন ভগীরথের প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি।
তৃণমূলের ওই শিক্ষক নেতার অভিযোগ, সিপিএম (CPM) এবং বিজেপির (BJP) উসকানিতে পার্শ্বশিক্ষকদের কেউ কেউ সোশ্যাল মিডিয়ায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চুলের মুঠি ধরার মতো অশালীন মন্তব্যও করেছেন। তাঁর কথায়, ‘এরা শিক্ষকের নামে কলঙ্ক। তারপরেও তিনি ২০২২ সালে কমিশন বসিয়েছেন। কমিশন রিপোর্ট দাখিলের পর সাম্মানিক বৃদ্ধি শুধু সময়ের অপেক্ষা।’
তৃণমূলি পার্শ্বশিক্ষকদের সংগঠনটির আলিপুরদুয়ার (Alipurduar) জেলা কমিটির সভাপতি রাজু মিশ্র বলছেন, ‘পার্শ্বশিক্ষকদের ৬০ বছর পর্যন্ত শিক্ষকতা করা সুনিশ্চিত করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই। বরং শুভেন্দু অধিকারী কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে পার্শ্বশিক্ষকদের সরাসরি সাম্মানিক প্রদানের প্রতিশ্রুতি দিলেও রক্ষা করেননি। তাই আস্থা রেখেছি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ওপরই।’ তাঁর সংযোজন, ‘তবে মূল্যবৃদ্ধির নিরিখে আমরা সাম্মানিক হিসেবে যে অঙ্কের টাকা পাই, তাতে সংসার চলে না।’ সংগঠনের আলিপুরদুয়ার জেলার সহ সম্পাদক বিধানচন্দ্র রায়ও মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।