সুভাষ বর্মন, পলাশবাড়ি: এক মাসে একাধিকবার ধর্নার ঘটনায় ইতি। আলিপুরদুয়ার-১ (Alipurduar) ব্লকের পলাশবাড়ির এক তরুণ-তরুণীর প্রণয়ের সম্পর্ক নিয়ে ব্যাপক চর্চা হয়। একাধিকবার বিয়ের দাবিতে ধর্নায় বসেন তরুণী৷ অবশেষে মঙ্গলবার উভয়পক্ষের মধ্যে সব রাজনৈতিক দলের নেতা-নেত্রীদের উপস্থিতিতে সালিশি সভা হয়। সেখানে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও ছিলেন। তরুণীর আগে বিয়ে হয়েছিল। স্বামী ছাড়া থাকলেও বিবাহবিচ্ছেদ ঘটেনি। সেক্ষেত্রে আইনি বাধা রয়েছে৷ এদিকে, প্রণয়ের সম্পর্ক নিয়ে তরুণ-তরুণী নিজেদের ভুল স্বীকার করে নেন। এভাবেই গোটা বিষয়টি এদিন মিটে যায়।
তরুণের এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য জীবন সরকারের কথায়, ‘এক্ষেত্রে তরুণীর বিবাহবিচ্ছেদ না ঘটায় পুনরায় বিয়ের ক্ষেত্রে আইনি জটিলতা রয়েছে। তাই তরুণ-তরুণী দুজনই সবার সামনে নিজেদের ভুলের কথা স্বীকার করে নেন। সবার সম্মতিতে শেষে শান্তিপূর্ণ মীমাংসা হয়। তরুণী ভবিষ্যতে আর এরকম কিছু করবেন না বলে জানিয়ে দেন।’
মরিচঝাঁপি গ্রামের প্রাইমারি স্কুলের মাঠে উভয়পক্ষকে নিয়ে আলোচনা সভা শুরু হয়। সেখানে তরুণী পুরো ঘটনা সবার সামনে তুলে ধরেন। নিজের মতো ঘটনার বিবরণ দেন তরুণও। সেখানে তৃণমূলের পূর্ব কাঁঠালবাড়ি অঞ্চল সভাপতি গিরীন্দ্রনাথ বর্মন, বিজেপির ৩ নম্বর মণ্ডল সহ সভাপতি সুরেন সরকার, সিপিএমের এরিয়া কমিটির সদস্য তপন বর্মন, সারা ভারত গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির এরিয়া সম্পাদিকা আলপনা দাস, তরুণীর বাড়ির এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য বাপি দত্ত প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি গিরীন্দ্রনাথ বর্মনের কথায়, ‘আগে যা হওয়ার হয়েছে। এদিন সুষ্ঠুভাবে সব কিছুর মীমাংসা হয়ে যায়।’ তরুণী বিবাহিতা। ডিভোর্স হয়নি। তাই আইনের দিক থেকে এখানে জোর করে বিয়ে দেওয়া সম্ভব নয়। এরকম সব দিক বিবেচনা করেই মীমাংসা করা হয়েছে বলে বিজেপির সুরেন সরকার ও সিপিএম নেতা তপন বর্মন জানিয়েছেন। যাবতীয় পরিস্থিতি বিবেচনা করে তরুণীও এই সিদ্ধান্ত মেনে নেন। তরুণীর কথায়, ‘তরুণ নিজের ভুল স্বীকার করেছে৷ আমিও সব মেনে নিয়েছি। তাছাড়া বিবাহবিচ্ছেদ না হওয়ায় পুনরায় বিয়ের ক্ষেত্রে বাধা রয়েছে। তাই সুষ্ঠুভাবেই এদিন মীমাংসা হয়েছে।’
গত ৩০ মার্চ পলাশবাড়ির ওই তরুণী মরিচঝাঁপিতে গিয়ে তরুণের বাড়িতে বিয়ের দাবিতে ধর্নায় বসে৷ তাতে কাজ না হওয়ায় গত ২১ এপ্রিল পলাশবাড়িতে তরুণের প্রসাধনী দোকানের সামনে ফের ধর্নায় বসেন৷ সেদিন থেকেই ঘটনা প্রকাশ্যে চলে আসে। কিন্তু জনপ্রতিনিধিরা সালিশি করতে না পারায় গত ২৬ এপ্রিল ফের দোকানের সামনে ধর্নায় বসলে তরুণীর পাশে দাঁড়ায় একাধিক মহিলা সংগঠন। সেদিন রাতেই তরুণীকে তরুণের এক আত্মীয়র বাড়িতে রেখে আসেন স্থানীয়রা। তারপর এদিন সবার উপস্থিতিতে সালিশি সভার মাধ্যমে বিষয়টি মিটে যায়।