ওদলাবাড়ি: দোমোহনি-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের পর এবার বাগরাকোট। তৃণমূল কংগ্রেস (TMC) পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে ই-টেন্ডার (E-Tender) প্রক্রিয়ায় কাটমানি (Cut Money) চাওয়ার অভিযোগ তুলল দলেরই বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠী, যা নিয়ে শোরগোল পড়েছে জেলায় শাসকদলের অন্দরে। বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীর অভিযোগ, রাস্তা এবং নর্দমার কাজের জন্য ১২ শতাংশ কাটমানি চেয়েছে বাগরাকোট গ্রাম পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ। বিষয়টি নিয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে জেলা শাসকের কাছে। ফলে কাটমানি কাণ্ডে নতুন করে ফাঁপরে তৃণমূল।যদিও বিষয়টিকে পুরোপুরি মনগড়া, মিথ্যা এবং ষড়যন্ত্র বলে ব্যাখ্যা করেছেন বাগরাকোট গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান রাজু ছেত্রী।
ওয়াশাবাড়ি চা বাগানের বাসিন্দা বেদান্ত শাহি, দেওয়ান মাঝি, সেওয়ান মাঝি, টিকা মঙ্গর প্রমুখ জানিয়েছেন, গ্রাম পঞ্চায়েতের বেশ কয়েকটি সিসি রোড এবং নর্দমা নির্মাণের জন্য ই-টেন্ডার প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করেছিলেন তাঁরা। হার্ডকপি (Hard Copy) পেশ করার তারিখ নির্ধারিত করা হয়েছিল গত ১৭ অক্টোবর সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত। অভিযোগ, সেদিন সকাল সাড়ে দশটা থেকে গ্রাম পঞ্চায়েতে ঢোকার মূল গেট চক্রান্ত করে ভেতর থেকে তালাবন্ধ করে রাখা হয়েছিল। বিষয়টি নিয়ে সেদিনই প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে অভিযোগ জানানোর পর মাল থানার পুলিশের হস্তক্ষেপে সময়সীমা শেষ হওয়ার ১৫ মিনিট আগে গেট খোলা হয়। তারপর গ্রাম পঞ্চায়েতের ই-টেন্ডার (E-Tender) কমিটির সামনে টেন্ডার প্রক্রিয়া সংক্রান্ত সমস্ত হার্ডকপি পেশ করা হয়। বেদান্ত বলছেন, ‘ই-টেন্ডার কমিটির সদস্যদের চাহিদামতো ১২ শতাংশ কাটমানি দিতে অস্বীকার করায় আমাদের হার্ডকপি দিতে বাধা দেওয়া হয়েছিল।’
তৃণমূলের জেলা কমিটির প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক রাজু শাহি এবং বাগরাকোট গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন উপপ্রধান সরিতা শাহির ছেলে বেদান্ত। স্বাভাবিকভাবেই বিষয়টিতে রাজু এবং সরিতা শাহির ষড়যন্ত্রের ছায়া দেখছে গ্রাম পঞ্চায়েতের বর্তমান শাসক গোষ্ঠী। দলের বাগরাকোট অঞ্চল কমিটির সভাপতি রাজেশ ছেত্রী, গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান পুনম লোহার, উপপ্রধান রাজু ছেত্রী সকলেই এই অভিযোগকে পুরোপুরি মিথ্যে এবং মনগড়া বলে দাবি করছেন। রাজুর বক্তব্য, ‘ই-টেন্ডার কমিটি যদি ঘুষ চেয়ে থাকে তবে উপযুক্ত প্রমাণ দাখিল করুন অভিযোগকারীরা।’
তৃণমূলের মাল গ্রামীণ ব্লক কমিটির সভাপতি সুশীলকুমার প্রসাদও রাজুদের সঙ্গে একমত। তিনিও বলছেন, ‘ই-টেন্ডার প্রক্রিয়ায় ঘুষ চাওয়ার অভিযোগ কেন তোলা হচ্ছে বোধগম্য হচ্ছে না। পুরোটাই ষড়যন্ত্র এবং মিথ্যা অভিযোগ।’ রাজেশ ছেত্রী গোষ্ঠীর বিরোধী শিবিরের মুখ তথা এলাকার একসময়ের প্রভাবশালী রাজু শাহির কথায়, ‘বাস্তবে ই-টেন্ডার প্রক্রিয়ায় যা ঘটেছিল, অভিযোগে সেটাই উল্লেখ করেছে বেদান্ত। বাকিটা প্রশাসনিক স্তরে খতিয়ে দেখার দাবি জানিয়েছি।’ প্রশাসনিক সূত্রে খবর, অভিযোগের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।