ধূপগুড়ি: রোগীর আত্মীয়দের আটকে রেখে মারধরের গুরুতর অভিযোগ উঠল ধূপগুড়ি গ্রামীণ হাসপাতালের দুই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। বুধবার রাতে এমন অভিযোগে উত্তেজনা ছড়ায় হাসপাতাল চত্বরে। শেষ পর্যন্ত ধূপগুড়ি থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী হাজির হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। রোগী আত্মীয়দের তরফে থানায় লিখিত অভিযোগ জানানো না হলেও প্রায় ঘণ্টা খানেক ধরে চলে গণ্ডগোল। ঘটনার জেরে মারমুখী হয়ে ওঠে হাসপাতালে হাজির সাধারণ মানুষও।
জানা গিয়েছে, গতকাল রাত ৮টা নাগাদ ধূপগুড়ি গ্রামীণ হাসপাতালের ইমারজেন্সিতে পৌঁছান সাকোয়াঝোড়া ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত অঞ্চলের মল্লিকশোভা এলাকার বাসিন্দা প্রশান্ত রায় এবং জোৎস্না রায়। পায়ের ব্যাথায় কাতর চার বছরের শিশু কন্যাকে নিয়ে দম্পতি হাসপাতালে গেলে ডিউটিতে থাকা ডাঃ দেবদাস মণ্ডলকে দেখান তাঁরা। তিনি প্রেসক্রিপশনও করে দেন বলে জানা গিয়েছে। এরপর দম্পতি প্রেসক্রিপশনে লেখা ওষুধ চাইলে চিকিৎসকের সঙ্গে কথাকাটি শুরু হয়। সেসময় নাইট শিফটের চিকিৎসক ডাঃ সাধন সরকার সেখানে পৌঁছান। প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান অনুসারে, শিশুকন্যাকে নিয়ে আসা দম্পতি হাসপাতাল থেকে ওষুধ দেওয়ার দাবি জানাতে থাকেন এবং চিকিৎসকরা জানান রাতে ফার্মাসি বন্ধ থাকে সেজন্যে বাইরে থেকে কিনতে হবে। এনিয়ে কথাকাটাকাটি চরমে পৌঁছোলে দুইপক্ষের হাতাহাতি শুরু হয়। দম্পতির অভিযোগ, সেইসময় দুই চিকিৎসক এবং হাসপাতালের আরেক কর্মী তাঁদের টেনে নিয়ে কোলাপসেবল গেট আটকে দিয়ে মারধর করেন। চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে শিশুটির মা বলেন, ‘আমরা মিথ্যে বলছি কী না তা হাসপাতালের সিসিটিভি ক্যামেরায় দেখা হোক। যে চিকিৎসক একজন মহিলার গায়ে হাত তোলেন তাকে নিয়ে বলার কিছুই নেই। ওনারা আমাকে এবং স্বামীকে মারধর করার পাশাপাশি পুলিশে দেওয়ার হুমকি দেন।‘
ঘটনার সময় হাজির প্রত্যক্ষদর্শীদের করা ভিডিওতে দেখা যায়, ইমারজেন্সির সামনে শিশুকন্যা কোলে দম্পতির সঙ্গে ব্যাপক ঝগড়া এবং হাতাহাতিতে জড়িয়েছে দুই চিকিৎসক। দুই চিকিৎসক শিশুটির বাবার দু হাত ধরে টেনে নিয়ে যাচ্ছেন হাসপাতালের মূল ভবনের দিকে। পেছনে ছুটেছেন মহিলাও। এরপর শিশু সহ তার বাবা মা হাসপাতালের ভেতরে ঢুকে গেলে গেট লাগিয়ে দেওয়া হয়। যদিও ভিডিওটির সত্যতা যাচাই করেনি উত্তরবঙ্গ সংবাদ।
পরবর্তীতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পুলিশে খবর দেয়। হাসপাতালে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ। তবে ঘটনার পর থেকে হাসপাতলে দেখা যায়নি মূল অভিযুক্ত চিকিৎসক দেবদাস মণ্ডলকে। অপর চিকিৎসক সাধন সরকার বলেন, ‘এনিয়ে আমার কোনও মন্তব্য নেই। যদি কিছু বলার হয় তাহলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সামনেই বলব।‘
ঘটনা নিয়ে ধূপগুড়ি ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ অঙ্কুর চক্রবর্তী বলেন, ‘যতটুকু জেনেছি তাতে দুজন রোগীর আত্মীয় কর্তব্যরত চিকিৎসকের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করলে বাদানুবাদ বাঁধে। আমাকে জানানো হলে পুলিশে খবর দেই এবং তারা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেন।‘