সাগর বাগচী, শিলিগুড়ি: সোশ্যাল মিডিয়ায় রিল বানানোর কথা বলে দুই নাবালিকাকে ট্রেনে তুলে পাচারের অভিযোগ উঠল এক মহিলার বিরুদ্ধে। ঘটনাকে কেন্দ্র করে শিলিগুড়ির ৪ নম্বর ওয়ার্ডের আদর্শ নগর এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়াল। ঘটনায় অভিযুক্ত মহিলার স্বামী ও শাশুড়িকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ধৃতরা হল মহম্মদ নাসিরুদ্দিন ও সাহেদা আনসারি। মূল অভিযুক্ত সুহানা আনসারির বিরুদ্ধে শিলিগুড়ি জংশন জিআরপিতে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। শিলিগুড়ি রেল পুলিশ সুপার এস এস সালভা মুরগান বলেন, ‘একটি অভিযোগ হয়েছে। আমরা তদন্ত করে দেখছি।’
পুলিশ সূত্রের খবর, অভিযুক্ত সোহানা আনসারি মোবাইলে রিল বানানোর নাম করে এলাকার নাবালিকাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করে। এর আগেও সে ওই নাবালিকাদের সঙ্গে নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় রিল বানাতে গিয়েছিল। নাবালিকাদের যাতে সে না নিয়ে যায়, সেজন্য অভিযুক্তকে এলাকাবাসী সতর্কও করেছিলেন। অভিযোগ, বুধবার বিকালে এলাকার তিন নাবালিকাকে নিয়ে সোহানা শিলিগুড়ি জংশনে যায়। নাবালিকাদের নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি মহিলা নাবালিকাদের পরিবারের কাউকে জানায়নি বলে অভিযোগ। জংশনে ট্রেন উঠে নাবালিকাদের নিয়ে সোহানা রিল বানানোর পরিকল্পনা করেছিল। সেজন্য অভিযুক্ত মহিলা চারটি ট্রেনের টিকিট কেটে নিয়েছিল। হঠাৎ করে ট্রেন ছেড়ে দিলে বিপদ বুঝে তিন নাবালিকার মধ্যে একজন ট্রেন থেকে নেমে পড়ে। অভিযোগ, একজন ট্রেন থেকে নেমে পড়লেও বাকিদের ওই মহিলা ট্রেন থেকে নামতে দেয়নি।
ওই নাবালিকা বাড়ি ফিরে এসে অপর দুই নাবালিকার পরিবারকে বিষয়টি জানায়। রাতে দুই নাবালিকার পরিবারের তরফে শিলিগুড়ি জংশন জিআরপিতে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। ঘটনার পর আদর্শনগর থেকে অভিযুক্ত মহিলার স্বামী ও শাশুড়িকে গ্রেপ্তার করা হয়।
অপহৃত এক নাবালিকার বাবা বলেন, ‘মেয়ে বৃহস্পতিবার বিকালে আমাকে একবার ভিডিও কল করেছিল। বিহারের সোনপুরে সে রয়েছে বলে আমাকে জানিয়েছে। তার সঙ্গে অভিযুক্ত মহিলা রয়েছে। আমরা আতঙ্কের মধ্যে রয়েছি। ওই মহিলা পাচারের উদ্দেশ্যে মেয়েকে ভুল বুঝিয়ে নিয়ে গিয়েছে। পুলিশকে পুরো বিষয়টি জানিয়েছি।’
এলাকার মেয়েদের ফাঁদে ফেলে পাচারের উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ তুলে স্থানীয়রা শিলিগুড়ি থানায় গণস্বাক্ষর সংবলিত স্মারকলিপি জমা দেন। ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বিবেক সিংয়ের কথায়, ‘পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। আশা করছি, দ্রুত নাবালিকাদের উদ্ধার করা সম্ভব হবে। পুলিশ শিলিগুড়ি জংশনের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখছে। কোন ট্রেনে তারা গিয়েছে সেটি দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি অভিযুক্ত মহিলার মোবাইল লোকেশন ট্র্যাক করা হচ্ছে।’