হেমতাবাদঃ অ্যাম্বুল্যান্স না পেয়ে হাসপাতালে তাণ্ডব চালাল রোগীর পরিবারের লোকেরা। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুক্রবার উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে হেমতাবাদ গ্রামীণ হাসপাতালে। উত্তেজিত জনতার হাত থেকে প্রাণে বাঁচতে পালিয়ে শৌচালয়ে আশ্রয় নেয় অ্যাম্বুল্যান্স চালকেরা। অ্যাম্বুল্যান্স চালকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, এক অসুস্থ শিশুকে রায়গঞ্জ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য শিশুর পরিবারের লোকেদের কাছে অতিরিক্ত টাকা চায়। এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে অ্যাম্বুল্যান্স চালকের ওপর আক্রমণ করে রোগীর পরিজনেরা। নিমেষে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে হেমতাবাদ হাসপাতাল চত্ত্বরে।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, অসুস্থ শিশুর নাম রাকিব আলী (২) বাড়ি হেমতাবাদ থানার বাঙালবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের ধোয়ারই গ্রামে। এদিন সকালে বাড়ি সংলগ্ন পুকুরের ধারে দিদির সঙ্গে খেলতে খেলতে পা পিছলে পুকুরে পড়ে যায় ওই শিশুটি। সঙ্গে সঙ্গে শিশুটিকে সঙ্কটজনক অবস্থায় উদ্ধার করে নিয়ে যায় হেমতাবাদ গ্রামীণ হাসপাতালে। কর্তব্যরত চিকিৎসক সঙ্গে সঙ্গে অক্সিজেন লাগিয়ে শিশুটিকে রায়গঞ্জ মেডিকেল কলেজে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন শিশুর পরিবারকে। সেই সময়ই তাঁরা হেমতাবাদ হাসপাতালের এক অ্যাম্বুল্যান্স ভাড়া করেন। চালক নিয়ে যাওয়ার জন্য ৫০০ টাক দাবি করেন। তাতে রাজি হয়ে যান তাঁরা। এরপরই অসুস্থ শিশুটিকে রায়গঞ্জ মেডিকেল কলেজে নিয়ে যেতে চালক ফের ২০০০ টাকা দাবি করে বলে অভিযোগ। এরপরই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন রোগীর পরিবারের লোকেরা। অ্যাম্বুল্যান্স চালকদের মারধোর করা করেন উত্তেজিত জনতা। প্রাণ বাঁচাতে কেউ হাসপাতালের শৌচালয়ে, আবার কেউ আবার বিএমওএইচ-এর কোয়ার্টারে গিয়ে আত্মগোপন করে। এরপর হাসপাতালের অক্সিজেন লাগিয়ে শিশুটিকে নিয়ে অন্যগাড়ি ভাড়া করে রায়গঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায় পরিজনেরা।
যদিও শিশুটির পরিবারের লোকের দাবি, কোনও অ্যাম্বুল্যান্স চালককে মারধোর করা হয়নি। হাসপাতালের অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে ব্যক্তিগত গাড়ি ভাড়া করে রায়গঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসি। শিশুটির কিছু হলে হেমতাবাদ হাসপাতালের অ্যাম্বুল্যান্স চালক, স্বাস্থ্যকর্মী চিকিৎসক, নার্সের বিরুদ্ধে হেমতাবাদ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করব।
রায়গঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ এক চিকিৎসক বলেন, ওই শিশুর চিকিৎসা চলছে। ৭২ ঘন্টা না গেলে কিছু বলা যাবে না।” যদিও অ্যাম্বুল্যান্স চালকেরা এই বিষয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি। জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক পুরন শর্মা বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।