কলকাতা: কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ভোলবদল! হাইকোর্টের রিপোর্ট তলবের পরই মধ্যশিক্ষা পর্ষদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানাল, আগামী ২০ সেপ্টেম্বর অনামিকা বিশ্বাস রায়ের হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেওয়া হবে।
কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ দেওয়ার চার মাস পরও চাকরিতে যোগ দিতে পারেননি শিলিগুড়ির দুধমোড়ের বাসিন্দা অনামিকা। সোমবার হাইকোর্টে এই চাকরি সংক্রান্ত মামলার শুনানি ছিল। অনামিকা যে এখনও চাকরি পাননি, একথা শুনে এজলাসেই তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেন বিচারপতি। তিনি জানতে চান, কেন এখনও চাকরি পাননি অনামিকা?
জবাবে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের আইনজীবী সাফাই দিয়ে বলেন, ‘পুলিশ ভেরিফিকেশন অসম্পূর্ণ থাকায় ৪ মাস পরেও চাকরি পাননি অনামিকা। পুলিশ ভেরিফিকেশন না হওয়ায় আটকে রয়েছে ওই চাকরি।’ এ শুনে ক্ষুব্ধ হন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি প্রশ্ন করেন, ‘কেন ভেরিফিকেশন হয়নি? কোন থানা ছিল দায়িত্বে?’
অনামিকা শিলিগুড়ির বাসিন্দা। তাই তাঁর নাম-ঠিকানা সংক্রান্ত তথ্য যাচাইয়ের দায়িত্ব শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের। এবিষয়টি বিচারপতিকে জানাতেই তিনি প্রশ্ন করেন, ‘কেন আটকে থাকবে? উনি কি সন্ত্রাসবাদী?’ এনিয়ে মঙ্গলবার দুপুর ৩টের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে শিলিগুড়ি পুলিশকে নির্দেশ দেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। এরই মাঝে অনামিকা জানান, ‘পুলিশ ভেরিফিকেশন আগেই সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছে। এমনকি রিপোর্ট চলে গিয়েছে পর্ষদের অফিসেও।’ যার ফলে চাপে পড়ে পর্ষদ।
এর কয়েক ঘণ্টা যেতে না যেতেই মধ্যশিক্ষা পর্ষদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে অনামিকার চাকরির কথা জানায়। সোমবার সন্ধ্যায় পর্ষদ একটি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানায়, আগামী ২০ সেপ্টেম্বর অনামিকা বিশ্বাস রায়ের হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেওয়া হবে। প্রয়োজনীয় নথি নিয়ে তাঁকে পর্ষদে আসতে বলা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, এক বছরেরও বেশি সময় আগে নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে তৃণমূল বিধায়ক পরেশচন্দ্র অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারীর চাকরি কেড়ে শিলিগুড়ির ববিতা সরকারকে সেই চাকরি দিয়েছিলেন বিচারপতি। কিন্তু ববিতা তথ্য ভুল দেওয়ায় গত মে মাসে তাঁর শিক্ষকতার চাকরি ফিরিয়ে নেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। ওই চাকরি শিলিগুড়িরই অনামিকা বিশ্বাস রায়কে দেওয়ার নির্দেশ দেন তিনি। বিচারপতির নির্দেশের পর চার মাস কেটে গিয়েছে। কিন্তু এখনও তিনি চাকরিতে যোগ দিতে পারেননি।