উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ বাংলাদেশের কক্সবাজারের কুতুপালং রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির থেকে সমুদ্রপথে পালিয়ে ইন্দোনেশিয়া যাওয়ার চেষ্টা করছিল শতাধিক রোহিঙ্গা। যাওয়ার পথে মাঝ সমুদ্রে বিকল হয়ে যায় নৌকার ইঞ্জিন। এরপরই সমুদ্রে ভাসতে থাকে শরণার্থী বোঝাই সেই জলযান। রবিবার আন্দামান-নিকোবরের কাছে ভারত মহাসাগর থেকে রোহিঙ্গা সহ নৌকাটিকে উদ্ধার করে পোর্টব্লেয়ারে নিয়ে আসে আন্দামান-নিকোবর পুলিশ। দিল্লি থেকে কেন্দ্রীয় সরকার পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত শরণার্থীদের পোর্টব্লেয়ারেই রাখতে বলা হয়েছে।
ইঞ্জিন বিকল হয়ে যাওয়ায় গত শুক্রবার থেকে ভারত মহাসাগরে দিশাহীনভাবে ভাসছিল একটি নৌকা। নৌকাটিতে ১৪২জন যাত্রী ছিলেন। রবিবার বিকেলে আন্দামান-নিকোবর প্রশাসনের গোয়েন্দারা বিষয়টি জানায় পুলিশকে। এরপরই পুলিশের একটি উদ্ধারকারী দল অচল নৌকাটিকে আন্দামান নিকোবরের কাছে ভারত মহাসাগর থেকে উদ্ধে করে পোর্টব্লেয়ারে নিয়ে আসা হয়।
আন্দামান-নিকোবর পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, নৌকার যাত্রীরা প্রত্যেকেই রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের মানুষ। যাত্রীদের বেশিরভাগ নারী ও শিশু। তারা বাংলাদেশের কক্সবাজারে অবস্থিত কুতুপালং রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির থেকে পালিয়ে ইন্দোনেশিয়া যাওয়ার চেষ্টা করছিল। সমুদ্রপথে পালানোর সময়ই অচল হয়ে যায় নৌকার ইঞ্জিন। শুক্রবার থেকে উত্তাল মাঝ সমুদ্রে দিশাহীনভাবে ভাসতে থাকে নৌকাটি। প্রাণের ঝুঁকিতে থাকা যাত্রীদের উদ্ধার করতে রাষ্ট্রসংঘের শরণার্থী শাখা ভারত-সহ একাধিক দেশকে অনুরোধ করে। পরে আন্দামান-নিকোবর পুলিশ নৌকার যাত্রীদের উদ্ধার করে। যাত্রীদের অধিকাংশই ছিল নারী ও শিশু।
মূলত রোহিঙ্গাদের বাস মায়ানমারে রাখাইন প্রদেশে। ২০১৭ সালে দেশের সেনা বাহিনীর অত্যাচারের মুখে পড়ে দেশ ছাড়ে রোহিঙ্গারা। বাংলাদেশ সরকার তাদের আশ্রয় দেয়। একাধিক আন্তর্জাতিক সংস্থা তাদের জন্য ত্রাণ সামগ্রী পাঠাত। কিন্তু রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধ শুরুর পর থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ত্রাণ সামগ্রী আসা প্রায় একপ্রকার বন্ধ। বাংলাদেশ সরকার কূটনৈতিক স্তরে প্রচেষ্টা চালিয়েও এই শরণার্থীদের মায়ানমারে ফেরৎ পাঠাতে ব্যর্থ হয়েছে। এইমুহূর্তে বাংলাদেশে ১৬ লক্ষ রোহিঙ্গা আছে বলে সূত্রের খবর। সমুদ্রপথে বাংলাদেশ থেকে পালাতে গিয়ে বিভিন্ন সময়ে জলেডুবে রোহিঙ্গা মৃত্যুর খবর এসেছে।