উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ যখন তিনি ছিলেন স্বমহিমায়, তখন তাঁর পুজোয় মা কালীর অঙ্গে শোভা পেত কেজি কেজি সোনার গয়না। আজ তিনি তিহাড়ে, জৌলুস হারিয়েছে সেই বিখ্যাত কালী মায়ের পুজো। এবারও মায়ের গায়ে শোভা পাচ্ছে গয়না। তবে সেগুলি সোনার নয়, সবই ইমিটেশনের।
হ্যা ঠিকই অনুমান করেছেন। তিনি বোলপুরের একদা দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা অনুব্রত মণ্ডল। বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের গ্রেপ্তারির পর থেকেই নমো নমো করে কালী পুজো হচ্ছে বোলপুর তৃণমূল কার্যালয়ে। এবারও একই চিত্র। এ বার আরও কমেছে পুজোর জৌলুস। বিপুল অলঙ্কারে সজ্জিত কেষ্ট মণ্ডলের পুজোর প্রতিমা দেখতে দূরদূরান্ত থেকে মানুষ আসতেন বোলপুর তৃণমূল কার্যালয়ের সামনে। কারণ, দেখবার মতন ছিল কালী মায়ের সোনার সাজ। প্রতি বছর নিজের হাতেই মা’কে সোনার গয়না পরাতেন কেষ্ট। ‘কালীমা’কে সাজাতে টেবিলের সামনে গয়না বিছিয়ে বসতেন তিনি। বলতেন, কী ভাবে কত মানুষ ‘মা’কে সাজাতে গয়না দান করেছেন। পুজোকে কেন্দ্র করে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের উন্মাদনাও থাকত চরমে।
জানা গিয়েছে, ২০২১ সালের কালীপুজোয় তো প্রতিমার অঙ্গ ৫৬০ ভরি সোনার গয়না দিয়ে সাজিয়ে দিয়েছিলেন অনুব্রত। শোনা যায়, ওই গয়নার আনুমানিক বাজারমূল্য ছিল আড়াই কোটি টাকার উপরে। বিষয়টি নিয়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছিল রাজনৈতিক মহলে। বিরোধীদের সমালোচনাকে গুরুত্বই দেননি কেষ্ট।
কিন্তু এ বার সে সব ফিকে। এবার সেভাবে কাউকে তৃণমূলের কার্যালয়ে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছেনা। তৃণমূলের এক নেতা বলছেন, ‘‘প্রতি বছর অনুব্রত মণ্ডল নিজের হাতে মাকে গয়না পরাতেন। তখন পুজো নিয়ে অন্য উন্মাদনা ছিল সবার মধ্যে। এ বছর মায়ের গায়ে শুধু ইমিটেশনের গয়নাই দু’একটি সোনার গয়না ছাড়া মায়ের গায়ে আর কোনও দামি গয়না থাকবে না।’’ তৃণমূল নেতা জানান, “দাদার(অনুব্রত)পরিচালনায় যে হেতু পুরো পুজোটা হত, তাঁর অনুপস্থিতিতে প্রত্যেকেরই মনখারাপ সকলের। তাই জাঁকজমকটা নেই। তবে পুজো হচ্ছে নিষ্ঠার সঙ্গে। তিনি ফিরলে আবার জাঁকজমকভাবেই পুজো হবে। সেই আশাতেই রয়েছি।”