শিলিগুড়িঃ ওষুধের দোকানের ক্যাশবাক্স খুলে সব টাকা নিয়ে হাপিস হয়ে গেল রোগীর এক পরিজন। বুধবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে শিলিগুড়ি হাসপাতালের ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকানে। এই ঘটনায় হাসপাতাল চত্ত্বরজুড়ে ব্যপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। দোকানের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে চোরকে শনাক্ত করা সম্ভব হলেও অভিযুক্ত পুলিশের হাতের নাগালের বাইরে। অভিযুক্তকে খুঁজে না পেয়ে তার শ্বশুর-শাশুড়িকে আটক করেছে পুলিশ। অভিযুক্তের স্ত্রী শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগে চিকিৎসাধীন।
জানা গিয়েছে, সোমবার রাতে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে সন্তান প্রসব করাতে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগে ভর্তি করেন এক যুবক। ওই মহিলার সঙ্গে এসেছিলেন তাঁর বাবা ও মা। রাতভর তাঁরা শিলিগুড়ি হাসপাতালেই ছিলেন। সবকিছু ঠিকঠাকই চলছিল। এদিন ভোরের একটি সিসিটিভি ফুটেজ-ই সবকিছু বদলে দেয়। দোকানের এক কর্মীর কথায়, ভোরের দিকে একটু চোখ লেগে গিয়েছিল। আমাদের আরেক কর্মী দোকানের একপাশের দরজা খুলে বাথরুমে গিয়েছিল। কিছুক্ষণ পর চোখ খুলতেই নজরে পড়ে, ক্যাশবাক্স খোলা রয়েছে। ভেতরে কোনও টাকা পয়সা নেই।’ এরপরই সিসিটিভি ফুটেজ দেখে অবাক হয়ে যান ওই দোকানের কর্মীরা। দেখা যায়, দোকানের কর্মী দরজা খুলে বেরোনোর পরেই এক ব্যক্তি সেই দোকানের ভেতরে ঢুকে যায়। দোকানের ভিতরে থাকা কর্মীকে ঘুমিয়ে থাকতে দেখে ক্যাশবাক্স খুলে ভেতরে থাকা সব টাকা নিয়ে চম্পট দেয় ওই ব্যক্তি। দোকানের কর্মীদের দাবি, চুরি করার আগে দোকানের ক্যাশবাক্সে কুড়ি হাজার টাকা ছিল।
এদিকে, সিসিটিভি ফুটেজের সুত্র ধরে ওই দোকানের কর্মীরা তন্ন তন্ন করে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন হাসপাতাল চত্ত্বরে। এরমধ্যেই হাসপাতালে ভর্তি থাকা অন্তঃসত্ত্বা ওই মহিলার মা, বাবা জানান, ওই ব্যক্তি তাঁদের জামাই। এরপরই ওই দুইজনকে আটক করে ফেলেন দোকান কর্মীরা। জামাই এমন কাণ্ড ঘটিয়েছে, শুনে হতবাক হয়ে পড়ে ওই শ্বশুর-শ্বাশুড়ি। তাঁরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন জামাইয়ের বিরুদ্ধে। আর এসবকিছুর মধ্যে হাসপাতালের নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন উঠে গেল। অনেকেরই গুঞ্জন, ন্যায্যমূল্যের ওষুধের দোকান থেকে শুধু টাকা চুরিই নয়, রোগী ও পরিজনদের ব্যাগ, মোবাইলফোন চুরি যাওয়া নিত্যদিনের ঘটনা।
এই প্রসঙ্গে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালের সুপার চিকিৎসক চন্দন ঘোষের বক্তব্য, ‘এদিনের ঘটনা নিয়ে বিশেষ কিছু বলার নেই। তদন্তসাপেক্ষ ব্যাপার। জেলা হাসপাতালে বাড়তি নিরাপত্তা রক্ষী, সিসিটিভি রয়েছে। তবে এরপরেও যদি এধরনের ঘটনা ঘটে, তাহলে প্রয়োজনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করতে পুলিশ প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করব।’