দিনহাটা: কোন রোগ হলে কোন চিকিৎসককে দেখাবেন? কী ধরনের পরীক্ষা প্রয়োজন? এই সিদ্ধান্ত নিতে আপনার হয়ে কাজ করবে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স। এনিয়ে দিনহাটার ছেলে স্বরূপ দে তৈরি করেছে ‘আপনা বৈদ’ নামে এক হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটবট। চ্যাট জিপিটির (Chat Gpt) কথা আমরা সকলেই কমবেশি জানি। এবারে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সি ব্যবহার করে ‘আপনা বৈদ্য’ নামে এক হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটবট তৈরি করে, বিনে পয়সায় সাধারণের চিকিৎসার সহায়তা করার এই অভিনব উদ্যোগ নিয়েছেন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক স্বরূপ দে ও তাঁর পেশায় চিকিৎসক স্ত্রী পৌষালী দে। সমগ্র বিষয়টিতে কারিগরি সহায়তা করছেন ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির অধ্যাপক অশ্বীন গোপিনাথ। দিনহাটা সাহেবগঞ্জের ছেলে স্বরূপ দে দিনহাটায় স্কুল স্তরের পড়াশোনা শেষ করে, পরবর্তীতে বেলুড় রামকৃষ্ণ মিশন থেকে রসায়নে স্নাতক এবং বোম্বে আইআইটি থেকে মাস্টার্স কমপ্লিট করে আমেরিকায় গিয়ে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। এই মুহূর্তে তিনি জিন থেরাপির ওপর হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চতর গবেষণা করছেন।
সংবেদনশীল স্বভাবের স্বরূপ, বেলুড় রামকৃষ্ণ মিশনের পড়াশোনার সময়ই লক্ষ করেছিলেন সাধারণ মানুষের দুঃখ দুর্দশা। পাশাপাশি তিনি বুঝতে পারেন ভারতে এখনও ডাক্তারের যে বিপুল অপ্রতুলতা এবং তার কারণে প্রান্তিক অঞ্চলে যেরকম প্রতিনিয়ত সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়, সেক্ষেত্রে আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স সহায়ক হতে পারে। এই ভাবনা থেকেই ‘ আপনা বৈদ’ হোয়াটস অ্যাপ চ্যাট বট চালু করার ভাবনা আসে তাঁর মাথায়। স্বরূপ জানায়, বর্তমান সকলের ঘরেই মোবাইল ফোন রয়েছে এরফলে সংশ্লিষ্ট নম্বরে(চ্যাট বট নম্বরঃ ৮৯১০৮৫০২৭৪) হাই বা হ্যালো লিখলেই ‘ আপনা বৈদ’ আপনার স্বাস্থ্য সমস্যা সংক্রান্ত সমস্যা জানতে চাইবে। আবার টাইপ করে অথবা ভয়েস মেসেজের মাধ্যমে পাঠালে সমস্যার সম্ভাব্য কারণ ও কোন ধরণের ডাক্তারকে দেখাতে হবে তার প্রাথমিক বিশ্লেষণ করতে সক্ষম। ইংরেজি ছাড়াও বাংলা, হিন্দি এবং তামিল বুঝতে সক্ষম ‘ আপনা বৈদ’ অ্যাপটি। পাশাপাশি হাতে লেখা প্রেসক্রিপশন আছে, কিন্তু ঠিক কী লিখেছে তা ধরতে পারছেন না? শুধু একটা ফোটো তুলে আপলোড করে দিলেই প্রেসক্রিপশনের বর্ণনা দিয়ে দেবে এই অ্যাপ।তাই নয় রক্ত পরীক্ষা, ইসিজি ইত্যাদি মেডিক্যাল রিপোর্ট হাতে আছে কিন্তু ডাক্তারের ডেট পাচ্ছেন না? মেডিক্যাল রিপোর্টের ছবি পাঠিয়ে দিলে,এই সাইট তা বিশ্লেষণ করে দিতেও সক্ষম। এ ছাড়াও কোনও কাটা, ছেঁড়া, পোড়া ইত্যাদির ছবি তুলে পাঠালেও তার সম্পর্কে প্রাথমিকভাবে কি করা দরকার তার মুহূর্তে হদিশ দিয়ে দেবে। এক কথায় সহজ সরল পদ্ধতি অবলম্বন করে সুবিধাটি সাধারণের ব্যবহারের উপযোগী করে তোলা হয়েছে। এই উদ্যোগটি ইতিমধ্যে বিশেষভাবে সারা ফেলেছে। দিনহাটা হাইস্কুলের বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক জয়ন্ত চক্রবর্তী বলেন, ‘আজকের দিনে দাঁড়িয়ে আমরা চিকিৎসা নিয়ে অনেকেই সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগে থাকি। সেক্ষেত্রে এই প্রযুক্তি অনেকটাই সমস্যা সমাধানে সহায়ক হবে।’