উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: বাজার থেকে কোভিড ভ্যাকসিন তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ফার্মাসিউটিক্যাল জায়ান্ট অ্যাস্ট্রাজেনেকা। বিশ্বব্যাপী এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে। অ্যাস্ট্রাজেনেকা জানিয়েছে, বাণিজ্যিক কারণেই ভ্যাকসিন তুলে নেওয়া হচ্ছে। মঙ্গলবার তারা একটি সংবাদ সংস্থাকে বলেছে, ভ্যাকসিনটি আর তৈরি বা সরবরাহ করা হচ্ছে না।
করোনা পরিস্থিতিতে ব্রিটিশ-সুইডিশ সংস্থাটি বাজারে ভ্যাকসিন এনেছিল। অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার যৌথ উদ্যোগে তৈরি কোভিড ভ্যাকসিন বিশ্বব্যাপী কোভিশিল্ড এবং ভ্যাক্সজেভরিয়া নামে বিক্রি হয়। আদর পুনাওয়ালার সিরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া (SII) ভারতে এই ভ্যাকসিন তৈরি করেছিল। এদেশে তা বিক্রি হয়েছিল কোভিশিল্ড নামেই। পরে অভিযোগ উঠতে শুরু করে, এই টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে। যার ট্রায়াল বন্ধও করে দেওয়া হয়েছিল একসময়। যদিও সংস্থাটি প্রথমে অভিযোগ মানতে চায়নি। ২০২৩ সালে অ্যাস্ট্রাজেনেকার বিরুদ্ধে প্রথম মামলাটি দায়ের করেছিলেন জেমি স্কট নামে এক ব্যক্তি।
তাঁর অভিযোগ, ২০২১ সালের এপ্রিলে ভ্যাকসিন নেওয়ার পরে তাঁর মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয় ও তা জমাট বেঁধে যায়। এর ফলে তাঁর মস্তিষ্কে স্থায়ী ক্ষত তৈরি হয়। স্বাভাবিক কার্যক্ষমতাও কমে গিয়েছে বলে অভিযোগ জেমির। গত ফেব্রুয়ারি মাসে অ্যাস্ট্রাজেনেকা আদালতে একটি নথি জমা দেয়। সেখানে তারা স্বীকার করেছে যে, তাদের তৈরি কোভিড ভ্যাকসিনের কারণে টিটিএস বা থ্রম্বোসিস উইথ থ্রম্বোসাইটোপেনিয়া সিনড্রোমের মতো বিরল সমস্যা হতে পারে। এই রোগে আক্রান্ত হলে রক্তে অণুচক্রিকার পরিমাণ কমে যায় এবং রক্ত জমাট বাঁধে। আদালতে জমা করা নথিতে অ্যাস্ট্রাজেনেকা স্বীকার করে নিয়েছে, ‘আমরা এটি স্বীকার করছি যে, অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকার কারণে খুব বিরল রোগ হতে পারে।’
এদিকে, বাজার থেকে ভ্যাকসিন তুলে নেওয়া প্রসঙ্গে অ্যাস্ট্রাজেনেকা বলেছে, ‘মহামারির অবসানে ভ্যাক্সজেভরিয়া যে ভূমিকা পালন করেছে, সেজন্য আমরা গর্বিত। এই ভ্যাকসিন ব্যবহারে শুধু প্রথম বছরে ৬.৫ মিলিয়নেরও বেশি জীবন বাঁচানো সম্ভব হয়েছিল এবং বিশ্বব্যাপী তিন বিলিয়নেরও বেশি ডোজ সরবরাহ করা হয়েছিল। আমাদের প্রচেষ্টা বিশ্বজুড়ে স্বীকৃত।’