মাথাভাঙ্গা: ২২ জানুয়ারি অযোধ্যায় রাম মন্দিরের উদ্বোধন(Ayodhya Ram Mandir)। কিন্তু রাম স্বস্তিতে নেই। থাকবেনই বা কী করে! তাঁকে নিয়ে মাথাভাঙ্গায় পদ্ম ও ঘাসফুল শিবিরের মধ্যে খুব জোর দড়ি টানাটানি শুরু হয়েছে যে। বেশ কিছুদিন আগে থেকেই বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ও রামভক্ত উদযাপন কমিটির সদস্যরা মাথাভাঙ্গা শহরের প্রতিটি ওয়ার্ডে বাসিন্দাদের বাড়ি বাড়ি যাওয়া শুরু করেছেন। তাঁরা সবার মধ্যে অযোধ্যায় রাম মন্দিরের দ্বারোদঘাটন অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণপত্র এবং অক্ষত চাল বিতরণ করছেন। শহরের বিজেপি নেতারাও এই কর্মসূচিতে শামিল থাকছেন। উদ্যোক্তারা মদনমোহন ঠাকুরবাড়ি সংলগ্ন রাম মন্দিরে বিশেষ পুজো, মদনমোহন ঠাকুরবাড়ি সহ বেশ কয়েকটি মন্দির প্রাঙ্গণে প্রোজেক্টরের সাহায্যে রাম মন্দির উদ্বোধনের সরাসরি সম্প্রচার, মন্দিরে রামধুন ও ভজন সংকীর্তন এবং প্রসাদ বিতরণের কর্মসূচি নিয়েছেন। বাসিন্দারা প্রত্যেকে যাতে ওইদিন বাড়িতে পাঁচটি করে প্রদীপ জ্বালান ও শঙ্খধ্বনি করেন এবং উলুধ্বনি দেন সেজন্য বাসিন্দাদের প্রত্যেকের কাছে আবেদন জানানো হচ্ছে।
অন্যদিকে, রাম মন্দিরের উদ্বোধনের দিনই শ্রীশ্রী রামনবমী উদযাপন কমিটি সারাদিনব্যাপী একগুচ্ছ কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। প্রকাশ্যে না থাকলেও তৃণমূল যুব কংগ্রেস এই কর্মসূচির পেছনে রয়েছে। তাদের কর্মসূচিতে শহরের বিভিন্ন মন্দিরে পুজো, মন্দিরগুলিতে প্রদীপ প্রজ্বলন, শহরের পাঁচটি মোড় গেরুয়া পতাকায় মুড়ে যাওয়া, আব্বাসউদ্দিন সেতু ও দ্বিতীয় সুটুঙ্গা সেতু গেরুয়া পতাকায় সাজিয়ে তোলা, পাঁচ হাজার লাড্ডু বিতরণ কর্মসূচি রয়েছে। এছাড়াও ১০টি কীর্তনের দল, ৫০টি ঢাক, ২৫টি করে বজরঙ্গবলী এবং রামের ছবি আঁকা বড় পতাকা, ১০০ মাটির প্রদীপ এবং ২০০ মোটা মোমবাতি সহ শহরজুড়ে বিশাল শোভাযাত্রার কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে।
দুই রাজনৈতিক দলই এই বিষয়ে সরাসরি তাদের সংযোগের কথা স্বীকার না করলেও রাম মন্দিরের উদ্বোধনকে কেন্দ্র করে যে একে অপরকে ছাপিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে তা কারও চোখ এড়াচ্ছে না। মাথাভাঙ্গার বিজেপি নেতা তথা দলের কোচবিহার জেলা সহ সভাপতি মনোজ ঘোষ বলেন, ‘বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ও রামভক্ত উদযাপন কমিটি ২২ জানুয়ারির কর্মসূচিতে আমাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছে। আমরা ওই কর্মসূচিতে উপস্থিত থেকে তাকে সফল করব। এর মধ্যে কোনও রাজনীতি নেই।’ শ্রীশ্রী রামনবমী উদযাপন কমিটির কর্মসূচির বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে মনোজ বললেন, ‘এতদিন রামনামে ওদের সমস্যা হত। এখন রামভক্তির উন্মাদনায় ওরা এখন আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। আর এর জেরেই ওরা এই কর্মসূচি নিয়েছে।’
তৃণমূল যুব কংগ্রেস মাথাভাঙ্গা শহর ব্লক সভাপতি নয়নজ্যোতি সাহা বললেন, ‘রাম কোনও রাজনৈতিক দলের সম্পত্তি নন। তাই শ্রীশ্রী রামনবমী উদযাপন কমিটি মাথাভাঙ্গায় যে কর্মসূচি হাতে নিয়েছে আমরা তাতে শামিল হব। ওই কর্মসূচি সফলও হবে।’