ভুবনেশ্বর: মৃতদেহ একটা। এদিকে দাবিদার একাধিক। সকলেরই দাবি, এই দেহ তাঁর আত্মীয়ের। দুর্ঘটনায় যেহেতু দেহগুলি ছিন্নভিন্ন হয়ে গিয়েছে এবং পচন ধরতেও শুরু করেছে, তাই খালি চোখে শনাক্ত করা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই বলে এক দেহের দাবিদার একাধিক জন কী করে হতে পারেন। জানা গিয়েছে, ক্ষতিপূরণের লোভেই এমনটা করছেন অনেকে। অনেকে মৃতদেহগুলি নিজের পরিবারের সদস্য বলে দাবি করছেন।
ক্ষতিপূরণের লোভে এমনটা অনেকে করছেন, এই অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করেছেন ভুবনেশ্বর এইমসের ডিরেক্টর আশুতোষ বিশ্বাস। তিনি জানিয়েছেন, গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মৃতদেহ শনাক্তকরণের জন্য ডিএনএ পরীক্ষার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।জানা গিয়েছে, শনিবার মধ্যরাত থেকে এইমসে দেহ আসতে শুরু হয়েছে। প্রথমদিনই ৬১টি অ্যাম্বুল্যান্সে ১২৩টি দেহ আসে। ১১৮ জন চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মী নিরলসভাবে চালিয়ে যাচ্ছেন ময়নাতদন্তের কাজ।
উল্লেখ্য, শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ ওডিশার বালাসোরের বাহানাগা বাজারের কাছে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা হয়। দুর্ঘটনার কবলে পড়ে করমণ্ডল এক্সপ্রেস। স্থানীয় একটি সূত্রের দাবি, প্রথমে করমণ্ডল এক্সপ্রেস তীব্র গতিতে গিয়ে ধাক্কা মারে একই লাইনে আগে চলতে-থাকা একটি মালগাড়ির পিছনে।
দুর্ঘটনার অভিঘাতে করমণ্ডল এক্সপ্রেসের ইঞ্জিনটি মালগাড়ির উপরে উঠে যায়। ২৩টি কামরার মধ্যে ১৫টি কামরা লাইনচ্যুত হয়ে পাশের ডাউন লাইনে ও নয়ানজুলিতে পড়ে যায়। সেই লাইন দিয়ে তখন উলটো দিক দিয়ে আসছিল ডাউন বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস। করমণ্ডল এক্সপ্রেসের লাইনচ্যুত কামরাগুলি গিয়ে পড়ে ডাউন লাইনের উপর। বেঙ্গালুরু-হাওড়া ডাউন ট্রেনটি সেই বেলাইন কামরাগুলির উপর এসে পড়ে। হাওড়াগামী সেই ট্রেনটিরও দু’টি কামরা লাইনচ্যুত হয়। দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে বহু মানুষের। আহত বহু। উদ্ধারকাজে আনা হয় একাধিক উন্নত মানের যন্ত্র। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ শুরু হয়।