বালুরঘাট: এবার ভাগাভাগি করে পড়াশোনা শিখবে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার পড়ুয়ারা। আর সেজন্য দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার প্রথম লার্নিং হাব হিসাবে নির্বাচিত হল ঐতিহ্যবাহী বালুরঘাট হাই স্কুল। শিক্ষা দপ্তর ও জেলা প্রশাসনের তরফে ১৯০৭ সালে প্রতিষ্ঠিত এই শতাব্দী প্রাচীণ স্কুলকে মূল কেন্দ্র হিসেবে বেছে নেওয়ার ফলে খুশি শিক্ষামহল। একটি স্কুলের পড়ুয়া তার পাঠক্রমের প্রয়োজনীয়তার খাতিরে অন্য একটি স্কুলে যাচ্ছে। আবার একটি স্কুলের কোনও বিষয়ের শিক্ষকের প্রয়োজনীয়তা বোধ করলে, অন্য একটি স্কুল থেকে শিক্ষক এসে সেই বিষয়ে পড়ুয়াদের পাঠদান করছেন। এমনকি খেলাধুলো, গ্রন্থাগার, গবেষণাগার সবকিছুই একটি স্কুল অন্য স্কুলের সঙ্গে ভাগাভাগি করে চলবে। আপাতদৃষ্টিতে অবাক হওয়ার মতো বিষয় মনে হলেও এমনটাই বাস্তবায়িত হতে চলেছে বালুরঘাটে। স্কুল হবে এমন একটি জায়গা যেখানে শিক্ষার্থীরা উন্মুক্ত। শিক্ষকরা আরও বেশি পরামর্শদাতার মতো তাদের আকর্ষক কার্যকলাপের মাধ্যমে গাইড করবেন। একটি স্টুডেন্ট লার্নিং হাব স্কুলের প্রথাগত ও প্রচলিত নিয়ম দূরে সরিয়ে একটি নতুন ছাত্র-কেন্দ্রিক পদ্ধতির দিকে এগোনোর প্রক্রিয়া। শিক্ষক-ভিত্তিক শিক্ষা থেকে ছাত্র-ভিত্তিক শিক্ষার দিকে মনোযোগ সরিয়ে নেওয়ার সময় এসেছে এখন। বিশ্বমানের শিক্ষামূলক পরিবেশ প্রয়োজন, যেখানে শিক্ষার্থীরা বিরক্ত বোধ করবে না। একটি স্টুডেন্ট লার্নিং হাবের মধ্যে রয়েছে নমনীয় শিক্ষার পরিবেশ। যা ছাত্রদের শেখার কৌশলের বিশাল পার্থক্য তৈরি করবে। এই পদ্ধতি শুধু ছাত্রদের স্বাধীনতার অনুভূতি দেবে না। তাদের আত্মসম্মান বৃদ্ধি ও শিখতে আগ্রহী করে তুলবে এই লার্নিং হাব।
বালুরঘাট হাইস্কুলকে কেন্দ্র করে মোট দশটি স্কুল থাকবে। চারপাশে স্পোক স্কুল হিসেবে জুড়ে দেওয়া হয়েছে বালুরঘাট গার্লস হাইস্কুল, ললিতমোহন আদর্শ, নদীপার এনসি, আশুতোষ গার্লস, নদীপার গার্লস, নালন্দা বিদ্যাপিঠ, বিএম হাইস্কুল, তারণচন্দ্র হাইস্কুল, জেএলপি বিদ্যাচক্র ও প্রাচ্য ভারতী হাইস্কুল। এইসব স্কুল বিভিন্নভাবে পরস্পরের সহযোগিতায় একে অপরের সঙ্গে কাজ করতে পারবে। শিক্ষক, পড়ুয়া ও বিভিন্ন পরিকাঠামো ব্যবহার করে প্রতিটি স্কুলই উন্নত হয়ে উঠবে।
এবিষয়ে শুক্রবার দুপুরে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করবেন জেলা শাসক বলে জানান বালুরঘাট হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক সৃজিত সাহা। তিনি বলেন, ‘জেলায় প্রথম পরীক্ষামূলকভাবে এমন পরিকল্পনা করা হয়েছে। এই স্কুলগুলি একে অপরের শিক্ষক, পড়ুয়া নিয়ে পঠন পাঠন করতে পারবে। যার কেন্দ্রে থাকবে আমাদের স্কুল। বিভিন্ন স্কুলের মধ্যে ক্রীড়া, সংস্কৃতি, শিক্ষার আদান-প্রদান সম্ভব হবে।’ সমগ্র শিক্ষা মিশনের জেলা প্রকল্প আধিকারিক বিমলকৃষ্ণ গায়েন জানান, শুক্রবার বৈঠকের পরেই এই বিষয়ে সম্পূর্ন তথ্য দিতে পারব।