পঙ্কজ মহন্ত, বালুরঘাট: সারমেয়দের মহামারী পার্ভো রোগের (Parvovirus) প্রাদূর্ভাব প্রকট আকার ধারণ করছে বালুরঘাটে (Balurghat)। চিকিৎসার উপযুক্ত ব্যবস্থা ও পরিকাঠামো না থাকার কারণে কেনাইন ও পার্ভো ভাইরাস রোগের প্রকোপে ইতিমধ্যে শহরের বিভিন্ন এলাকার পথকুকুরদের প্রাণ যাচ্ছে। বিভিন্ন প্রান্তের একাধিক কুকুর এই রোগের সঙ্গে লড়াই করছে। স্থানীয় বাসিন্দা থেকে শুরু করে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের তরফে তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা করা হচ্ছে।
পথ কুকুরদের সেবা করছেন নালন্দা স্কুলের প্রধান শিক্ষক সৌমিত দাস। তিনি জানান, ‘এই ভাইরাস কুকুরদের অন্ত্রে ফুটো করে দেয়। ফলে রক্তপাত হয়। সংকেতপাড়ায় ১০ টির মতো কুকুর এই ভাইরাসে আক্রান্ত। আমরা তাদের অ্যান্টিবায়োটিক, স্যালাইন সহ চিকিৎসা করছি। সঠিক চিকিৎসা পেলে এই পথকুকুররা সেরে উঠবে।’
দুই নম্বর ওয়ার্ডের সুমন বর্মন বলেন, ‘এলাকার কয়েকটি কুকুরের অবস্থা সংকটজনক। সব সময় ঝিমোচ্ছে, বমি ও মলের সঙ্গে রক্ত বের হচ্ছে। আমরা ধরে বেঁধে চিকিৎসা করছি। পশু হাসপাতালের তরফে যদি তাদের দুমাস বয়সে টিকা দেওয়া যায়, ভালো হয়।’
বালুরঘাটের পশুপ্রেমী বিদিশা রায় গাঙ্গুলি বলেন, ‘ভাইরাসে আক্রান্ত কুকুরদের চিকিৎসকের পরামর্শ মতো একবেলা অথবা দুবেলা স্যালাইন দিতে হবে। খাবার ও জল দেওয়া যাবে না। কিছু ইনজেকশন চলবে। এই রোগ ভীষণই ছোঁয়াচে। এক কুকুর থেকে অন্য কুকুরের দেহে দ্রুত সঞ্চারিত হয়। মানুষের শরীরে যাওয়ার কোনও তথ্য নেই।’
বালুরঘাট পশু হাসপাতালের চিকিৎসক ডাক্তার আজগর আলি জানান, ‘কুকুর সুস্থ থাকা অবস্থায় টিকা দিতে হয়। মানুষের পোলিওর মতো একবার হয়ে গেলে কিছু করার থাকে না। যারা হাসপাতালে কুকুরকে নিয়ে আসে। তাদের টিকা ও চিকিৎসা হয়। পথ কুকুরদের টিকার বিষয়ে কোনও নির্দেশিকা নেই। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে নির্দেশ এলেই কাজ করা হবে।’
প্রতি বছর শীত (Winter) যাওয়ার সময়কালে কুকুরদের মধ্যে এই রোগের প্রভাব লক্ষ্য করা যায়। এবছর শহরের উত্তর চকভবানী, উত্তমাশা, সংকেত পাড়া ও ২ নম্বর ওয়ার্ড সহ একাধিক জায়গায় পথ কুকুররা এই ভাইরাসের আক্রান্ত হয়ে পড়েছে। অনেক পথপুকুর ইতিমধ্যেই সঠিক দেখভাল ও চিকিৎসার অভাবে মারা গিয়েছে। এই ভাইরাল রোগ একবার কুকুরদের হয়ে গেলে সারিয়ে ওঠার মতো তেমন ওষুধ এখানে নেই। যে ওষুধ আছে তা এদেশে পাওয়া মুশকিল ও তার দামও প্রচুর। ফলে এই রোগে আক্রান্ত কুকুরদের স্যালাইন দেওয়া ও কিছু ওষুধপত্র দিয়েই বাঁচিয়ে রাখছেন পশুপ্রেমীরা।