ফাঁসিদেওয়া: সীমান্ত এলাকায় মহানন্দা নদীতে বাংলাদেশি বালি মাফিয়াদের দৌরাত্ম্য বাড়ছে। শিলিগুড়ি মহকুমার ফাঁসিদেওয়া ব্লকের চটহাট মুড়িখাওয়া এলাকায় নিত্যদিন রমরমিয়ে কারবার চলছে বলে অভিযোগ। স্থানীয়দের দাবি, এই কারবারের জেরে নাব্যতা হারাচ্ছে মহানন্দা। গ্রামবাসীদের তরফে একাধিকবার প্রশাসনকে জানানো হলেও, লাভ কিছুই হয়নি। এদিকে, বিভিন্ন সময়ে বিএসএফের তরফে বাংলাদেশিদের চমকেও বালি ও মাটি চুরির কারবার ঠেকানো যাচ্ছে না।
একেবারে সীমান্ত ঘেঁষা গ্রামের চাষের জমি, চা বাগান গিলছে নদী। অবিলম্বে, বাংলাদেশিদের এই অবৈধ কারবার বন্ধের দাবি উঠছে। কৃষকদের সমস্যা হচ্ছে স্বীকার করছেন স্থানীয় বিশিষ্টরা। ফাঁসিদেওয়া পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য মহম্মদ সামসুল হকের কথায়, মাফিয়ারা ভারতে এসে বালি তুলে নিয়ে যাচ্ছে। কৃষকদের জমির মাটিও কেটে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্যও সুফিয়া খাতুনও একই অভিযোগ করেছেন। এই বিষয়টি নিয়ে আমরা জেলাশাসককেও চিঠি লিখে জানাবো। ফাঁসিদেওয়ার বিডিও সঞ্জু গুহ মজুমদারের এবিষয়ে মন্তব্য, সীমান্তের নদী থেকে বালি পাচারের আন্তর্জাতিক সমস্যার বিষয়টি জেলা প্রশাসনকে জানানো হবে।
একইভাবে ফাঁসিদেওয়া পুরোনো হাটখোলা এলাকাতেও একইভাবে সীমান্ত পাহারারত বিএসএফের সামনেই নদীতে দৈনিক কয়েকশো বালি শ্রমিক নামছেন। গভীর গর্ত করে টায়ারে চাপিয়ে বালি পাচার চলছে বলে অভিযোগ। শুধু তাই নয়, কৃষি জমির ধার থেকেও মাটি চুরি করছে এই বাংলাদেশি পাচারকারীরা। এদিকে, ফাঁসিদেওয়ার মানগছ, গোয়ালগছ, ফকিরগছ, বন্দরগছ, লালদাসজোত এলাকায় ভারতীয় কৃষকদের জমি নদী গর্ভে চলে যাচ্ছে বলে দাবি কৃষকদের। বিএসএফ ধমক দিলে পাচারকারীরা দূরে চলে যায়। ফের ভারতের সীমানা থেকে চলে বালি পাচার।
প্রতিনিয়ত এদেশের কৃষকরা সমস্যায় পড়ছেন। গুরুত্বপূর্ণ মহানন্দা নদী ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এরপরও, প্রশাসনের তরফে এই কারবার রুখতে কেন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না, তানিয়ে প্রশ্ন উঠছে। কৃষকদের তরফে, এই কারবার ঠেকাতে দুই দেশের সীমান্ত নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সংস্থার মধ্যে বৈঠকের দাবি করা হয়েছে। গোয়ালজোতের মহম্মদ হামিদ, মুড়িখাওয়ার মহম্মদ ইসমাইলদের কথায়, এই কারবার ঠেকাতে কোনও উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না। অবিলম্বে, প্রশাসনের হস্তক্ষেপের প্রয়োজন রয়েছে। অন্যথায়, বর্ষায় আরও কৃষকের জমি গিলবে মহানন্দা।