নয়াদিল্লি: শনিবার সারারাত বৃষ্টিতে ভিজেছে দিল্লি। রবিবারেও তার বিরাম নেই। জি২০ শীর্ষ সম্মেলনের শেষদিন বৃষ্টি মাথায় করেই সকাল সকাল রাজঘাটে পৌঁছে জাতির জনক মহাত্মা গান্ধির স্মৃতির উদ্দেশ্যে তাঁর সমাধিস্থলে শ্রদ্ধা অর্পণ করলেন জি২০ গোষ্ঠী এবং অভ্যাগত তামাম রাষ্ট্রনেতারা। গোটা বিষয়টির নেতৃত্বে শিরোভাগে রইলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী রবিবার সকাল ৮টা নাগাদ দিল্লির প্রগতি ময়দানের ভারত মণ্ডপম সেন্টার থেকে অদূরে রাজঘাটে পৌঁছে যায় একের পর এক বিদেশি কনভয়। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনক, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সহ বাকিরাও এক এক করে পৌঁছোন রাজঘাটে। জি২০-এর অতিথিদের আগমনের কথা ভেবে আগাম সাজিয়ে তোলা হয় গোটা রাজঘাট। ছিল আঁটসাট নিরাপত্তার ঘেরাটোপ। গত দু দিন ধরে রাজঘাটকে আরও নিরাপদ করে তুলতে ‘স্নেক’ এবং ‘মাঙ্কি ক্যাচার’দের বহাল করা হয়। দিল্লির অন্যান্য অঞ্চলের মতো এই অঞ্চলেও বাঁদরের দৌরাত্ম্য কম নয়, রয়েছে সাপের ভয়ও। সেই বিপত্তির কথা ভেবে নেওয়া হয়েছিল আগাম ব্যবস্থা। ফলস্বরূপ রবিবার নির্বিঘ্নেই সম্পন্ন হয় জি২০’র রাষ্ট্রনেতাদের গান্ধি তর্পণ পালা।
এদিন রাজঘাটে প্রত্যেকের সঙ্গে সৌজন্য বিনিময় করে, খাদির উত্তরীয় পরিয়ে দেন মোদি। একই সঙ্গে ব্যাকড্রপে থাকা সবরমতি আশ্রমের সঙ্গে সকলের পরিচয় করান তিনি। নেপথ্যে বাজছে তখন বাপু ভজন – ‘বৈষ্ণব জন তো’। এরমধ্যেই বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মোদির সঙ্গে চাপা গলায় জরুরি কিছু আলোচনা করতেও দেখা যায়। সকলে উপস্থিত হলে মোদি তাঁদের নিয়ে যান সমাধিস্থলের দিকে। গান্ধির প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপনে মোদি সহ জি২০-এর অধিকাংশ রাষ্ট্রনেতারাই খালি পায়ে সমাধিস্থলে পৌঁছোন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন, জার্মান ওলাভ সলজের মতো দু একজনের পায়ে দেখা যায় খাদির তৈরি সাদা কাপড়ের স্যান্ডেল। মোদি নিজেও ছিলেন খালি পায়ে ছিলেন। সমাধিস্থলে নামের ক্রম অনুযায়ী তাঁদের দাঁড় করানো হয়, সামনে রাখা হয় সাদা বোগেনভিলিয়া ফুলের স্তবক৷ একত্রে সকলে সেখানে শ্রদ্ধা অর্পণ করেন। গান্ধি স্মরণে এক মিনিট নীরবতাও পালিত হয়। এরপর পোডিয়ামে ফিরে আসেন তাঁরা। জি২০ রাষ্ট্রনেতাদের জন্য বিশেষ ভিজিটার্স অ্যালবামে সকলে একত্রে সাক্ষরও করেন। রাজঘাট থেকেই ভারত মণ্ডপম সেন্টারে জি২০ সম্মেলনের শেষ পর্বে অংশ নিতে ফিরে আসেন তাঁরা।