নাগরাকাটা: গোর্খাল্যান্ডের ইস্যু তাঁর ছাড়তে না পারারই কথা। তাও আবার শিবচু কান্ডে নিহতদের স্মরণ অনুষ্ঠানে। বৃহস্পতিবার শহিদ তর্পণের ওই কর্মসূচী থেকে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা সুপ্রিমো বিমল গুরুং ফের আলাদা রাজ্যের দাবির আওয়াজ উচ্চগ্রামে নিয়ে গেলেন। জিটিএতে ডুয়ার্সের ৩৯৬ টি মৌজা অন্তর্ভুক্তির কি হল সেই প্রশ্নও এদিন করতে দেখা গেছে তাঁকে। এব্যাপারে রাজ্য গঠিত হাই পাওয়ার কমিটির সিদ্ধান্ত জানানোর দাবিতেও সরব হন তিনি। বিমলের মুখে গোর্খাল্যান্ড ধ্বনিত হলেও আগামী নির্বাচনে তাঁরা কোন পক্ষে সেব্যাপারে টু শব্দটিও করেন নি এই গোর্খা নেতা। রাজনৈতিক মহলের ধারনা পাহাড়ে কোনঠাসা গুরুং জল মাপতে চাইছেন। তিনি বলেন, ‘গোর্খাল্যান্ড চিরকালের ইস্যু। কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারকে বলছি এব্যাপারে আলোচনা শুরু করুন। এক টেবিলে সব পক্ষ বসে বার্তালাপ চলুক।’ আগামী নির্বাচনে তাঁদের অবস্থান কি হবে সেই প্রশ্নের সুস্পষ্ট জবাব এড়িয়ে গিয়ে বলেছেন, ‘সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটিতে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তাছাড়া আমাদের ১৮ দলের জোট রয়েছে। সেখানে চর্চা হবে।’ অনীত থাপাদের পক্ষ থেকে দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্র থেকে গোপাল লামাকে প্রার্থী করার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। এব্যাপারে বিমল গুরুং বলেন, ‘তাঁকে ভাল মতো চিনি। সজ্জন ব্যক্তি। ২০১৯ সালে আমরাই দাঁড় করাতে চেয়েছিলাম। তিনি রাজি হন নি। এখন জাতি বিক্রি করে যারা ভাত খায় তাঁদের খপ্পরে পড়ে গেছেন তিনি। পাহাড়ের মানুষ মেনে নেবে না।’
শিবচুর এদিনের অনুষ্ঠানে কংগ্রেসে যোগ দেওয়া একদা বিমল গুরুংয়ের অন্যতম সঙ্গী বিনয় তামাং কিছুক্ষনের জন্য আসেন। এই বিষয়টি নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে উঠেছে। বিনয়ের কোনও প্রতিক্রিয়া না মিললেও বিমল গুরুং বলেন, ‘এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই। বিনয় স্রেফ শহিদদের শ্রদ্ধার্ঘ অর্পণ করতে আসেন। তাঁর এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই।’ ২০১১ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি সরস্বতী পুজোর দিন পুলিশের গুলিতে মোর্চার ৩ সমর্থক বিকি লামা, বিমলা রাই ও নীতা খাওয়াসের মৃত্যু হয়।
বিমল এর ভাষণ এদিন ছিল নরম-গরমের সহাবস্থান। কেন্দ্র ও রাজ্য দুপক্ষের বিরুদ্ধেই তোপ দাগতে দেখা যায় তাঁকে। তবে কেন্দ্রের প্রতি উষ্মাই ছিল বেশি। সাম্প্রতিক তিস্তা বিপর্যয়ে জিটিএ এলাকায় ব্যপক ক্ষয়ক্ষতি হয়ে গেলেও অনীত থাপারা ক্ষতিগ্রস্থদের জন্য কিছুই করছে না বলেও তাঁর অভিযোগ। শিবচুর বলিদান পার্কের পাশে অবস্থিত একটি মাঠে অনুষ্ঠিত সভায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মোর্চার সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি, কার্যনির্বাহী সভাপতি লোপসাং লামা, যুব মোর্চার সভাপতি নমন রাই, নারী মোর্চার নেত্রী উর্মিলা রুম্বা সহ ডুয়ার্সের শিবু সুনুয়ার, রাজেশ বরাইলির মতো শীর্ষ নেতারা।