সৌরভ দেব, জলপাইগুড়ি: জলপাইগুড়ি মেডিকেল কলেজের (Jalpaiguri Medical College) ল্যাবরেটরিতে সোমবার থেকে শুরু হল বায়োপসি পরীক্ষা (Biopsy Test)। ফলে এখন থেকে রোগীদের আর বেসরকারি ল্যাবরেটরিতে গিয়ে মোটা টাকা খরচ করতে হবে না। অন্যদিকে, বায়োপসি পরীক্ষার জন্য কিছু নমুনা উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজে (North Bengal Medical College) পাঠানো হত। সেটিও সময়সাপেক্ষ বিষয় ছিল। পরিষেবা চালু হওয়ায় খুশি স্থানীয়রা।
অন্যদিকে জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতাল বিভাগ থেকে ইএনটি বিভাগকে সুপারস্পেশালিটি বিভাগে স্থানান্তরিত করার একটা পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। তাতে একই ছাদের তলায় সার্জারি এবং ইএনটি বিভাগটি থাকলে পরিষেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে অনেকটাই সুবিধে হবে কর্তৃপক্ষের। জলপাইগুড়ি মেডিকেল কলেজের এমএসভিপি ডাঃ কল্যাণ খান বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা করছিলাম, মেডিকেল কলেজে বায়োপসি চালু করব। অবশেষে আজ সফল হলাম। বায়োপসির জন্য আমাদের এখানে খুব ভালো পরিকাঠামো তৈরি করা হয়েছে। এতে চিকিৎসার ক্ষেত্রে অনেকটাই সুবিধে হবে। অন্যদিকে ইএনটি বিভাগ স্থানান্তরিত করা নিয়ে চিন্তাভাবনা রয়েছে। তবে কবে সুপারস্পেশালিটিতে ইএনটি বিভাগ চালু করা হবে সেটি এখনও ঠিক হয়নি।’
বায়োপসি পরীক্ষার জন্য মূলত যে মাইক্রোটম মেশিনটির দরকার হয় সেটি জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতাল থাকার সময় থেকে নতুন অবস্থায় পড়ে ছিল। সেসময় বহুবার চেষ্টা করেও এই বিষয়ে প্রশিক্ষিত টেকনিসিয়ান এবং পরিকাঠামোগত সমস্যার কারণে বায়োপসি চালু করা যায়নি। জলপাইগুড়ি মেডিকেল কলেজ চালু হওয়ার পর সুপারস্পেশালিটি বিভাগে প্রথমেই ল্যাবরেটরির পরিকাঠামো চাঙ্গা করা হয়। জেলা হাসপাতাল বিভাগে থাকা পুরোনো ল্যাবরেটরিকে শুধু নমুনা সংগ্রহের সেন্টার হিসেবে রেখে সুপারস্পেশালিটি বিভাগে ২৪ ঘণ্টা ল্যাবরেটরি পরিষেবা চালু করা হয়। মেডিকেল কলেজ সূত্রে খবর, মাইক্রোটম মেশিন চালানোর জন্য দুজন দক্ষ টেকনিসিয়ান রয়েছেন। এছাড়া আরও ২০ জন দক্ষ টেকনিসিয়ান রয়েছেন ল্যাবরেটরিতে।
জলপাইগুড়ি মেডিকেল কলেজে প্রতিদিন গড়ে ১৫ থেকে ২০টি বিভিন্ন ধরনের অস্ত্রোপচার হয়ে থাকে। যার মধ্যে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বায়োপসির প্রয়োজন হয়। এতদিন পর্যন্ত বায়োপসির জন্য নমুনা রোগীর পরিবারের সদস্যদের বাইরে বেসরকারি জায়গা থেকে করিয়ে আনতে হত। যার জন্য কয়েক হাজার টাকা খরচ হত। কিছু ক্ষেত্রে নমুনা উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজে পাঠানো হত। সেখান থেকে রিপোর্ট আসতে বেশ কিছুদিন লেগে যেতে। ফলে চিকিৎসা শুরু হতেও দেরি হত।
জলপাইগুড়ি মেডিকেল কলেজের প্যাথলজি বিভাগের প্রধান নির্মলকুমার ভট্টাচার্য বলেন, ‘প্রথম আমরা দুটি নমুনা পেয়েছি। একটি প্রসূতি বিভাগ থেকে এবং অপরটি ইএনটি বিভাগ থেকে।’