শিলিগুড়ি: রাত আটটার পর রামঘাটে শব নিয়ে ঢুকতে গেলেই বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে মূল দরজা। রবিবার রাতে রামঘাটে শেষকৃত্য করার জন্য শব নিয়ে এমনই অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হল একটি পরিবার। যাকে কেন্দ্র করে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। রামঘাটের দায়িত্বে থাকা শ্রীআগরওয়াল মণ্ডলের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জয় টিব্রুওয়ালের দাবি, ‘আমি সম্পাদক থাকার সময় ২৪ ঘণ্টাই রামঘাটে শবদাহের ব্যবস্থা করেছিলাম। পরবর্তীতে স্থানীয় কিছু মানুষ এসে নানা সমস্যার কথা জানানোয় আমরা সকাল আটটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত রামঘাট খোলা রাখছি।’ যদিও ওই শব ৫ নম্বর ওয়ার্ডেরই ছিল। ওই মৃতের পরিবারের সদস্য মহেশ সাহানির বক্তব্য, ‘এরকম কোনও নিয়ম করা হয়েছে বলে আমরা ওয়ার্ডের লোকেরাই জানতাম না।’ মহেশের আরও অভিযোগ, ঘণ্টা দুয়েক ধরে রামঘাটের সামনে শব রেখে সঞ্জয় টিব্রুওয়াল সহ ওই ট্রাস্টি বোর্ডের অন্য কর্তাকে ফোন করেও কোনও কাজ হয়নি। শেষমেশ কিরণ চন্দ্র শ্মশানে শব নিয়ে যান মহেশরা।
এনিয়ে সরব হয়েছে বিহারি সেবা সমিতি। সেবা সমিতির সভাপতি উপেন্দ্র রায় বলেন, ‘যে কোনও শ্মশানই ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকে। রবিবার রাতে যখন শব নিয়ে গেল ওই পরিবার, মানবিকতার খাতিরে সেটা খুলে দেওয়া উচিত ছিল। এটা নির্মমতা দেখানো হয়েছে। পুরনিগমের এটা দেখা উচিত। আমরা এই ঘটনার প্রতিবাদে সব জায়গায় চিঠি দেব।’ যদিও এব্যাপারে মেয়র গৌতম দেবের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘রামঘাট প্রাইভেট অর্গানাইজেশন দেখে। তাই ওই ব্যাপারে আমার কিছু বলার নেই।’
মহেশের অভিযোগ, রবিবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে আমার আত্মীয় মারা যান। আমাদের পরিবারের একজন সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে রামঘাট শ্মশানে গিয়ে শব নিয়ে আসার কথা বলে আসে। খড়ির জোগাড়ের কথাও বলে দিয়ে আসে। কেয়ারটেকার আটটার সময় শ্মশান বন্ধ করে দেওয়ার কথা জানাননি। এরপর সাড়ে আটটার দিকে শবদেহ রামঘাট শ্মশানে নিয়ে যেতেই বিপত্তি বাধে। মহেশ বলেন, ‘দেহ ভেতরে ঢোকাতে যেতেই শ্মশানের গেট বন্ধ করে দেওয়া হয়। বিভিন্ন জায়গায় ফোন করলেও কোনও কাজে আসেনি। শেষমেশ কিরণ চন্দ্র শ্মশানে শব নিয়ে যাই।’ শুধু মহেশের পরিবারের শবই নয়, আরও বেশ কয়েকটি শবও গত কয়েকদিনে ঘুরে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। সঞ্জয়ের অবশ্য দাবি, ‘কমিটির সিদ্ধান্ত। আমার কিছু করার নেই। এটা প্রাইভেট।’