চাঁচল: পুরসভা ইস্যুকে হাতিয়ার করে তৃণমূলকে কোণঠাসা করতে চাঁচলে সাংসদের নেতৃত্বে পথে নামল বিজেপি। গত বৃহস্পতিবার জেলায় প্রশাসনিক বৈঠক থেকে চাঁচলকে পুরসভা করার দাবি আপাতত নাকচ করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সরকারের হাতে টাকা না থাকাতেই এমন সিদ্ধান্ত বলে জানিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী। ২০১০ সালে ঘোষণা হওয়ার পরেও এখনো পুরসভা চালু হয়নি চাঁচলে। ২০২১ সালে বিধানসভা ভোটের প্রাক্কালে তৎকালীন পুর ও নগর উন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম চাঁচলে এসে বলেছিলেন ছয় মাসের মধ্যে পুরসভা হবে। রাজ্যপালের স্বাক্ষর হয়ে গেছে। তাই স্বাভাবিকভাবেই মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার পর ক্ষোভ জমেছে চাঁচলের মানুষের মধ্যে। আর সেই ইস্যুকে সামনে রেখেই সোমবার চাঁচলে বিজেপির পক্ষ থেকে অবস্থান বিক্ষোভ করা হয়। উপস্থিত ছিলেন উত্তর মালদার বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু সহ জেলা এবং ব্লক নেতৃত্ব।
কিন্তু বিজেপির এই অবস্থান বিক্ষোভ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে রবিবার রাত থেকে উত্তেজনা ছড়ায় চাঁচলে। রবিবার মধ্যরাতে অবস্থান বিক্ষোভ কর্মসূচির প্রস্তুতির জন্য নেতাজি মোড়ে দলীয় পতাকা লাগাচ্ছিলেন বিজেপি কর্মীরা। সেই সময় তৃণমূলের স্থানীয় কয়েকজন ছাত্র নেতার বিরুদ্ধে বিজেপি কর্মীদের মারধর এবং দলীয় পতাকা ছিড়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠে। এই নিয়ে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। পরবর্তীতে বিজেপি কর্মীরা চাঁচল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে।
আক্রান্ত বিজেপি নেতা প্রসেনজিৎ শর্মা বলেন, ‘আমরা আমাদের কর্মসূচির জন্য পতাকা লাগাচ্ছিলাম। সেই সময় তৃণমূলের কয়েকজন ছেলে এসে আমাদের মারধর করেছে। পতাকা ছিড়ে দিয়েছে।’ যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের মালদা জেলার সাধারণ সম্পাদক বাবু সরকার বলেন, ‘বিজেপি কর্মীরা নেতাজী মূর্তির সামনে পতাকা লাগাচ্ছিল। আমরা তার প্রতিবাদ করেছিলাম। কোনও মারধরের ঘটনা ঘটেনি। ’
এদিকে কর্মীদের মারধরের খবর পেয়ে সোমবার সকাল এগারোটা নাগাদ উত্তর মালদা সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সভাপতি উজ্জ্বল দত্ত আক্রান্ত বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন। তার কিছুক্ষণ পরে এসে পৌঁছান উত্তর মালদার সাংসদ। চাঁচল থানায় গিয়ে আইসি পূর্ণেন্দু কুন্ডুর কাছে অভিযুক্ত তৃণমূল কর্মীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান তাঁরা। তারপর বিকাল তিনটে থেকে চাঁচল নেতাজি মোড়ের পাশে মঞ্চ বেঁধে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করে বিজেপি। মঞ্চ থেকে তৃণমূলকে কার্যত এক হাত নেন খগেন মুর্মু। তিনি বলেন, ‘তৃণমূল চাঁচলের মানুষকে বোকা বানিয়েছে। মমতা অপমান করেছেন চাঁচলবাসীকে। এখানকার বিধায়ক মানুষের দাবি আদায় না করতে পেরে হ্যাংলার মতো দাঁড়িয়ে থেকেছেন। তৃণমূল বুঝতে পেরেছে চাঁচলের মানুষ ক্ষিপ্ত। তাই আমরা পুরসভা ইস্যুতে যখন আন্দোলনে নামছি আমাদের বাধা দিতে চাইছে। যদিও এসব করে কোনও লাভ হবে না। ’