শিলিগুড়ি: আতশকাচের তলায় পারফরমেন্স। ’২৪-এর লড়াইয়ে লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছাতে দলীয় বিধায়কদের (MLA) লক্ষ্যমাত্রা নির্দিষ্ট করে দিল বিজেপি (BJP)। নিজের মহল্লায় ১০ শতাংশ ভোট বৃদ্ধি তো করতেই হবে, বাড়তি ঘাম ঝরাতে হবে পাশের বিধানসভা এলাকাতেও। দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের এমন নির্দেশিকায় কার্যত বিপাকে বাংলার বিজেপি বিধায়করা। পারফরমেন্স দেখাতে না পারলে যে ’২৬-এর টিকিট পাওয়া অনেকটাই দুষ্কর হতে পারে, বুঝতে পারছেন তাঁরা। কিন্তু ভোট ১০ শতাংশ বাড়বে কোন পাটিগণিতে, বুঝতে পারছেন না অনেকেই।
বিজেপির রাজ্য কমিটির প্রথমসারির এক নেতা বলছেন, ‘জনপ্রতিনিধি হওয়ার পর অনেকের মধ্যেই একটা গা-ছাড়া মনোভাব কাজ করে। কিন্তু দলের প্রতি সকলের দায়বদ্ধতা থাকা উচিত। ভালো ফল করতে গেলে সকলের চেষ্টা থাকা দরকার, তাই এধরনের নির্দেশিকা।’
‘গায়ে হাওয়া লাগিয়ে ঘুরে বেড়ানোর দিন শেষ’- লোকসভা নির্বাচনের ক্ষেত্রে দলীয় বিধায়কদের জন্য বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব যে গাইডলাইন (Guideline)বেঁধে দিয়েছে, তাতে এমন কথা বলা যায়। কী রয়েছে সেই গাইডলাইনে? দলীয় সূত্রে খবর, ’২১-এর ভোটে জয়ী বিধায়কদের অন্তত ১০ শতাংশ ভোট বৃদ্ধির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাঁরা যাতে পাশের বিধানসভা কেন্দ্রে (যদি দলীয় বিধায়ক না থাকে) ভোট বৃদ্ধির ক্ষেত্রে বিশেষ নজর দেন, সে কথাও বলা হয়েছে ওই নির্দেশিকায়। জয়ী হয়েও অন্য দলে চলে যাওয়া বিধায়কের কেন্দ্রটি দখলে রাখার ক্ষেত্রেও আশপাশের বিধায়কদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। দলীয় তরফে এমন নির্দেশিকা পাওয়ার পর প্রকাশ্যে অনেক বিধায়কই ভোট বৃদ্ধির দাবি করছেন। কিন্তু কোন উপায়ে তা সম্ভব, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করছেন ঘনিষ্ঠ মহলে। তবে এমন নির্দেশিকার পর ঘাম না ঝরলে যে ’২৬-এ টিকিট পাওয়া কঠিন হয়ে দাঁড়াবে, বুঝতে পারছেন তাঁরা। অনেকের বক্তব্য, ভালো ফলের জন্য চাপে রাখার কৌশল।
এই চাপকে আবার ভালোভাবে নিচ্ছেন শিলিগুড়ির বিধায়ক শংকর ঘোষ। তাঁর বক্তব্য, ‘লোকসভায় যত বেশি আসন জেতা সম্ভব হবে, ততই ’২৬-এর লড়াই সহজ হবে। তাই এখন থেকে পরিশ্রম প্রয়োজন।’
কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নির্দেশ স্বীকার করে নিয়ে কোচবিহার দক্ষিণের বিধায়ক নিখিলরঞ্জন দে দাবি করছেন, ‘এখন সংগঠন অনেক বেশি শক্তিশালী। ফলে ব্যবধানটা ৪,৯৩১ ভোটের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না। অনেক বাড়বে।’ এমন দাবি করে বিজেপির পরিষদীয় দলনেতা তথা মাদারিহাটের বিধায়ক মনোজ টিগ্গা বলছেন, ‘পঞ্চায়েত ভোটের পুনরাবৃত্তি ঘটবে না। চা বাগান শ্রমিক বা আদিবাসীরা যে বিজেপির সঙ্গে আছেন, তা প্রমাণ হয়ে যাবে ভোটের বাক্স খুললে। ৬০ হাজার লিড থাকবে আলিপুরদুয়ার কেন্দ্রে।’