উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: সুতপা চৌধুরী হত্যাকাণ্ডে ফাঁসির সাজা ঘোষণা করলো আদালত। বহরমপুরের ফাস্ট ট্র্যাক আদালতের অতিরিক্ত ও জেলা দায়রা বিচারক সন্তোষকুমার পাঠক বৃহস্পতিবার সুতপা খুনে অভিযুক্ত সুশান্ত চৌধুরীকে ফাঁসির সাজা শোনান।সাজা ঘোষণার পর সুশান্তের আইনজীবী বলেন, ‘মক্কেলের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
সুতপা চৌধুরীকে খুন করার পর ১৫ মাসের মাথায় মঙ্গলবার এই নারকীয় হত্যা কান্ডের শুনানি হয়।এই শুনানিতে সরকারি পক্ষের আইনজীবী বিভাস চট্টোপাধ্যায় ও অভিযুক্ত পক্ষের আইনজীবী পীযূষ ঘোষ ছিলেন। ৫৪ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয় এই মামলায়। মৃতার বাবা-সহ সাক্ষ্য দেন ঘটনার দিন উপস্থিত প্রত্যক্ষদর্শী, সাংবাদিক, ই-কমার্স সংস্থার কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী এবং পুলিশ।অভিযুক্ত সুশান্তের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২সহ একাধিক ধারায় চার্জশিট দাখিল করা হয়। আদালতে জমা পড়ে ৩৮৩ পাতার চার্জশিট।সব পক্ষের বক্তব্য শুনেই সুশান্তকে ফাঁসির সাজা দেয় আদালত। তবে এই ঘোষানর পর সুশান্তের আইনজীবী বলেন, “আমার মক্কেল এক জন মেধাবী ছাত্র। তাঁর বৃহত্তর ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে অন্ততপক্ষে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের প্রার্থনা করেছিলাম। মহামান্য আদালত তাঁর মৃত্যুদণ্ডের সাজা দিয়েছে। রায়ের কপি পাওয়ার পর মক্কেলের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ২ মে মুর্শিদাবাদের বহরমপুরের শহিদ সূর্য সেন রোড ধরে নিজের মেসে ফিরছিলেন সুতপা চৌধুরী। তাকে অনুসরণ করে এক যুবক। মেসের দরজার সামনেই সুতপার ওপর অতর্কিতে ঝাঁপিয়ে পড়ে ছুরি দিয়ে তাকে এলোপাথাড়ি কোপাতে থাকে ওই যুবক। ঘটনার ভিডিও প্রকাশ্যে আসতেই শিউড়ে ওঠে গোটা রাজ্য। প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান এবং সিসিটিভি ফুটেজ দেখে গ্রেপ্তার করা হয় ওই যুবককে। এরপর জানা যায় অভিযুক্ত যুবক সুতপার পূর্ব পরিচিত। দীর্ঘদিন প্রেমের সম্পর্ক তাদের। সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে চেয়েছিল সুতপা। যা মেনে নিতে পারেনি প্রেমিক সুশান্ত। ঘটনার দিন সন্ধ্যা ৬টায় নিজের মেস থেকে বেরিয়েছিলেন অভিযুক্ত।খুন করার পর সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ ফিরে আসেন মেসে। ৪২ টি ছুরির আঘাত পাওয়া গিয়েছিল সুতপার শরীরে।
গোরাবাজার এলাকার বাসিন্দা তথা ওই ঘটনার এক প্রত্যক্ষদর্শী বান্টি ইসলাম আদালতে বলেন, ‘‘চোখের সামনে এই নৃশংস হত্যাকাণ্ড দেখে চার দিন ঘুমোতে পারিনি। অভিযুক্তের ফাঁসির সাজা হওয়া উচিত। যদি ফাঁসি না হয় তা হলে মেয়েটির উপর চরম অবিচার হবে।’’
এখন দেখার নিম্ন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ নেয় সুশান্তে পরিবার।