রাহুল মজুমদার, শিলিগুড়ি: শিলিগুড়িতে রাতবিরেতে চুরি হয়ে যাচ্ছে বিএসএনএলের তার। কখনও তার কেটে তামা বের করে নিয়ে যাচ্ছে দুষ্কৃতীরা। আবার কখনও শুধুমাত্র তার কেটে রেখে পালিয়ে যাচ্ছে দুষ্কৃতীর দল। গত তিন মাসে শিলিগুড়ি শহরে অন্তত ৫০টি এমন ঘটনা ঘটেছে। পুলিশে অভিযোগ জানাতে গেলে বিএসএনএলকে ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে, আবার কখনও শুধুমাত্র জেনারেল ডায়েরি করে রেখে দেওয়া হচ্ছে। এমনই অভিযোগ উঠছে শিলিগুড়ি পুলিশের বিরুদ্ধে। এভাবে ফাইবার চুরি যাওয়ায় বিপাকে পড়েছে বিএসএনএল কর্তৃপক্ষ।
নির্বাচনের সময় বিএসএনএলকে বিভিন্ন ভিভিআইপিদের অনুষ্ঠানে যেমন ফোন এবং ইন্টারনেট সংযোগ দিতে হয়, তেমনই সরকারি দপ্তরগুলিতে পরিষেবা স্বাভাবিক রাখতে হয়। কিন্তু দুষ্কৃতীদের দৌরাত্ম্যে রীতিমতো চিন্তায় কর্তৃপক্ষ। বিএসএনএলের শিলিগুড়ি অপারেশন এরিয়ার জেনারেল ম্যানেজার (সিএসএফএ) সন্দীপন ভট্টাচার্য বলেন, ‘দুষ্কৃতীদের উৎপাতে আমরা অতিষ্ঠ হয়ে যাচ্ছি। এভাবে তার কেটে নিয়ে গেলে বিপদ। পুলিশ অভিযোগ নিতে চাইছে না। জেনারেল ডায়েরি করে ছেড়ে দিচ্ছে। নির্বাচনের সময় তার কেটে দিলে আমাদের কাছে এমন কোনও পদ্ধতি নেই যে রাতারাতি ঠিক হয়ে যাবে।’ অন্যদিকে, শিলিগুড়ি পুলিশের ডিসি (সদর) তন্ময় সরকারের কথায়, ‘বিএসএনএল আমাদের কিছু জানায়নি। থানার ওপরেও তো আমরা রয়েছি।’
শিলিগুড়ির প্রধাননগর, সুভাষপল্লি, কলেজপাড়া, হিলকার্ট রোড, হাকিমপাড়া সহ শহরের একাধিক এলাকায় বিএসএনএলের ফাইবার কেটে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। গত তিন মাস ধরে চলছে এই কাজ। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ফাইবার কেটে চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে দুষ্কৃতীরা। এরপর সেগুলি বিক্রি করে নেশার সামগ্রী কেনা হচ্ছে বলে অভিযোগ। মূলত ভোরের দিকে এই কাজ করা হচ্ছে।
শুক্রবার রাতেও শিলিগুড়ির সুভাষপল্লি এলাকায় ফাইবার কেটে নিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। তার দু’দিন আগে পুরোনো প্রধাননগর থানার ঠিক সামনে থাকা বাক্স থেকে ফাইবার কাটা হয়। বিএসএনএলের আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, একটি বাক্সের থেকে ফাইবার কাটা হলে অন্তত ৩০০ ফোন এবং ইন্টারনেট সংযোগ নষ্ট হয়। একবার ফাইবার কাটা পড়লে অন্তত তিনদিন সময় লাগে তা ঠিক করতে।
আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে শিলিগুড়ির ডিসিআরসি শিলিগুড়ি কলেজে বিএসএনএলকে ইন্টারনেট এবং টেলিফোন সংযোগ দিতে হবে। এর বাইরে বিভিন্ন সেক্টর অফিস এবং বুথেও সংযোগ দিতে হবে। তার আগে ফের দুষ্কৃতীরা যদি ফাইবার কেটে নিয়ে যায়, তাহলে বিএসএনএল পড়বে বিপদে। তাই পুলিশ দ্রুত তদন্ত করে দুষ্কৃতীদের গ্রেপ্তার করুক, চাইছেন বিএসএনএলের কর্তারা।