সানি সরকার, শিলিগুড়ি: ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক (NH 10) নিয়ে এবার জনমত তৈরির সিদ্ধান্ত। গত এক মাস ধরে দফায় দফায় যান চলাচল বন্ধ থাকছে জাতীয় সড়কের রবিঝোরা থেকে ২৯ মাইল পর্যন্ত অংশটুকুতে। ফলে কালিম্পং (Kalimpong) ও সিকিমের (Sikkim) সঙ্গে শিলিগুড়ির (Siliguri) সড়ক সংযোগ থাকছে ঘুরপথে। এর প্রভাব পড়েছে পর্যটন (Tourist) সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে। এমন নানা সমস্যা তুলে ধরতে এবার জনমত তৈরির সিদ্ধান্ত পর্যটন ব্যবসায়ীদের (Tourism Business) সংগঠন হিমালয়ান হসপিটালিটি অ্যান্ড টুরিজম ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্ক (এইচএইচটিডিএন)।
‘সেভ এনএইচ-টেন’ স্লোগানকে সামনে রেখে দার্জিলিং ও কালিম্পং জেলায় প্রচারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংগঠনটি। জানা গিয়েছে, শিলিগুড়ি শহরের পাশাপাশি সেবক, কালিঝোরা, তিস্তাবাজার সহ বিভিন্ন এলাকায় জাতীয় সড়ক রক্ষার ডাক দিয়ে প্রচার চালানো হবে। জাতীয় সড়কের ওপর নির্ভরশীলদের কাছ থেকে স্বাক্ষর ও মতামত সংগ্রহ করা হবে। এর জন্য কয়েকটি এলাকায় শিবির করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যার রূপরেখা তৈরি করা হচ্ছে। সর্বসাধারণের মতামত সংগ্রহে অনলাইন ব্যবস্থাও চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংগঠনটি।
সাধারণ সম্পাদক সম্রাট সান্যাল বললেন, ‘দফায় দফায় জাতীয় সড়ক বন্ধ থাকায় শুধু যে পর্যটনের ক্ষতি হচ্ছে, তা নয়। চরম সমস্যায় পড়তে হয় সাধারণ মানুষকে। জাতীয় সড়ক কতটা গুরুত্বপূর্ণ, সেটা তুলে ধরতে এ ধরনের কর্মসূচির সিদ্ধান্ত। কীভাবে জনমত তৈরি করা হবে, তার রূপরেখা তৈরি করা হচ্ছে। কয়েকদিনের মধ্যে আমরা বিষয়টি নিয়ে রাস্তায় নামছি। আশা করব প্রশাসন সঠিক পদক্ষেপ করবে।’
মাঝেমাঝে জাতীয় সড়ক বন্ধ হয়ে পড়ায় কিছুদিন আগেই এইচএইচটিডিএনের তরফে কালিম্পং জেলা প্রশাসনকে চিঠি দিয়ে দ্রুত রাস্তা মেরামতের আর্জি জানানো হয়েছিল। কিন্তু তারপরেও ৪৮ ঘণ্টার জন্য রাস্তা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় জেলা প্রশাসন। তাই সংগঠনটির তরফে শনিবার চিঠি দেওয়া হয়েছে রাজ্যের পূর্তমন্ত্রী পুলক রায়কে। পৃথক চিঠি দেওয়া হয়েছে পূর্ত দপ্তরের সচিব অন্তরা আচার্যকে। লোকসভা নির্বাচনের পর এইচএইচটিডিএনের একটি প্রতিনিধিদল পূর্তমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে কলকাতায় যাবে বলে জানা গিয়েছে।
এদিন সকাল ৬টা থেকে ফের ৪৮ ঘণ্টার জন্য জাতীয় সড়কের রবিঝোরা থেকে ২৯ মাইল পর্যন্ত যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। লিকুভির এবং রবিঝোরায় এদিন ধসের মাটি-পাথর সরানোর কিছুটা কাজ হয়েছে। কাজ চলবে রবিবারও। জেলা প্রশাসনিক কর্তাদের বক্তব্য, ‘অতি বর্ষণের জেরে রবিঝোরা এবং লিকুভিরে ধস নামায় যান চলাচল বন্ধ রেখে মেরামতের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’ কিন্তু রাস্তা মেরামতির ক্ষেত্রে কেন স্থায়ী ব্যবস্থা করা হবে না, সেই প্রশ্ন উঠছে বিভিন্ন মহল থেকে।
একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, পূর্ত দপ্তর থেকে স্থায়ী মেরামতের জন্য এস্টিমেট করে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু সড়ক পরিবহণমন্ত্রক থেকে এখনও অর্থবরাদ্দ করা হয়নি। উল্লেখ, জাতীয় সড়ক মেরামতি পূর্ত দপ্তরের ন্যাশনাল হাইওয়ে ডিভিশন করে থাকলেও, অর্থবরাদ্দ করে কেন্দ্রীয় সরকার।